বিশ্বের ভয়ংকর ও রহস্যে ঘেরা শিকারি স্থানসমূহ (ছবিসহ)
আপনি যদি ভূত-প্রেতে বিশ্বাসী না হন এবং ভয়ংকর ও রহস্যে ঘেরা স্থানে যাবার ইচ্ছায় থাকেন তাহলে এই স্থানসমূহ আপনার জন্য। এ সকল স্থানে গেলে আপনিও বিশ্বাস করতে বাধ্য হবেন যে, অলৌকিক কিছু বিষয় পৃথিবীতে রয়েছে।
এসব স্থানে যে সকল মানুষ বসবাস করেন তারা সকলে এই স্থানে যেতে ভয় পান। তাদের মনে এ সকল স্থান নিয়ে অনেক ভ্রান্ত-ধারণা রয়েছে। যার কিছু কিছু সত্যিও বটে। আসুন জেনে নেয়া যাক সে সকল রহস্যময় স্থানের কথা-
১. স্ক্রিমিং টানেল, নায়াগ্রা জলপ্রপাত, অন্টারিও:
স্ক্রিমিং টানেলে ভ্রমণে যেয়ে কিছুক্ষণ এর সামনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করুন। সে মুহূর্তে আপনি আপনার জীবনের সবচেয়ে আতঙ্কজনক মুহূর্ত অনুভব করবেন। যখন একটি যুবতী মেয়ের বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুনতে পাবেন। তার কান্নার আওয়াজ যেন আপনার মাথার পেছন থেকেই আসছে এরকম অনুভূতি হবে।
১৯৯০ সালে কৃষিজমি থেকে বাড়তি জল কমানোর জন্য এই টানেল নির্মাণ করা হয়েছিল। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, একজন যুবতী মেয়ের গায়ে আগুন লেগে যাবার পর সে নিজেকে বাঁচানোর জন্য এই সুড়ঙ্গের মাঝে চলে যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সে নিজেকে বাঁচাতে পারে নি।
তার গায়ে আগুন লাগার কারণ হিসেবে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে। কেউ বলেছেন, তার ঘরে আগুন লাগার ফলে তাদের নিজের গায়েও আগুন লাগে। কেউ বলেন, সেই সুড়ঙ্গের মাঝে তাকে ধর্ষণ করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়, যার ফলে তার আত্মা আজও সেখানে ঘুরাঘুরি করছে। তখন থেকেই এই স্থানকে মানুষ অনেক ভয় পায় এবং এই স্থানের রহস্য দিনের পর দিন শুধু বাড়তে থাকে।
২. আমিতিভিলা হাউস, ১১২ মহাসাগর এভিনিউ, লং আইল্যান্ড:
১৯৭৪ সালে কুখ্যাত দিফিউ হত্যাকান্ড এই বাড়িতে সংঘটিত হয়। রোনাল্ড এর জ্যেষ্ঠ পুত্র, নৃশংসভাবে এক রাতে তার পুরো পরিবারকে হত্যা করেন। সকালে এসে সেখানে দেখা যায় সকলের পিঠে গুলি করার দাগ এবং তাদের উপর নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। পরবর্তীতে পরিবারের বেঁচে থাকে একমাত্র ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয়। সকলের ধারণা ছিল সেই ছেলের উপর খারাপ আত্মার ছায়া ছিল।
এই ঘটনার ১৩ মাস পর আরেকটি পরিবার খুব কম দামে এই বাড়িটি ক্রয় করেন। এরপর তারা এখানে এসে বসবাস করা শুরু করেন। সবকিছু ভালোই চলছিল তাদের পরিবারে। কিন্তু কিছুদিন পর পরিবারের কর্তা আজব ব্যবহার শুরু করেন। তিনি ক্রমেই হিংস্র হয়ে উঠেন। তখন সকলে ধারণা করেন, এবার সেই খারাপ আত্মা তার মাঝে এসে পড়েছে।
একজন বিশেষজ্ঞকে সেখানে নিয়ে আসা হয়, সেই আত্মাকে তাড়ানোর জন্য, তিনি বলেন, তিনি বাড়িতে এসেই একটি আওয়াজ শুনতে পেয়েছেন। তাকে বলা হচ্ছে সেখান থেকে বের হয়ে যেতে। পরবর্তীতে সেই পরিবার এই বাসা ত্যাগ করেন। তখন থেকে এ স্থানের আশেপাশে কোন লোকারণ্য নেই।
৩. এডিনবরা কাসল, স্কটল্যান্ড:
স্কটল্যান্ডের রয়েল পরিবারের একটি বাড়ি হল এই এডিনবরা কাসল। যা প্রায় ২০০০ বছর আগে নির্মিত করা হয়েছিল। বিভিন্ন যুদ্ধে বন্দীদের এখানে মৃত্যুদন্ড দেয়া হত। একে বিশ্বের সবচেয়ে পোড়ো জায়গা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। অসংখ্য কিংবদন্তী এই দুর্গের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এই দুর্গের ভেতর বিভিন্ন সুড়ঙ্গ রয়েছে। এমন একটি সুড়ঙ্গ রয়েছে যেখানে মানুষ যাবার পর আর ফিরে আসে না।
একবার একজন ব্যক্তিকে সুড়ঙ্গের মাঝে একটি রসি দ্বারা পাঠানো হয়। কিন্তু সে অর্ধেক রাস্তা যাবার পর আর ফিরে আসতে পারে নি। অনেকেই বিশ্বাস করেন এর ভেতরে খারাপ কিছু রয়েছে যা মানুষকে মেরে ফেলে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে এখানে অনেক ছায়া দেখা যায়।
৪. ইংল্যান্ড এর টাওয়ার, লন্ডন:
এরি এমন একটি স্থান যার পেছনে কিছু ভয়ানক ইতিহাস রয়েছে। এই টাওয়ারে বিভিন্ন সময়ে অনেক মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। যার ফলে এর আশেপাশে সবসময় তাদের আত্মার ঘুরাঘুরি লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে সালিসবারি কাউন্টেস, লেডি জেন গ্রে এবং অ্যান বলিয়েন এর আত্মা সেখানে বেশি ঘুরাঘুরি করে বলে জানা যায়।
এদের তিনজনকে আলাদা আলাদা তিন বছরে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলেও এদের ভয়ে স্থানীয় লোকজনেরা খুবই বিভ্রান্ত। লেডি জেন গ্রেকে সবসময় সাদা পোশাকে দেখা যায়, অ্যান বলিয়েন তার মাথার খুলি হাতে নিয়ে দাড়িয়ে থাকে। অনেক মানুষ এদেরকে দেখতে পেয়েছেন।
৫. হাইগেট সিমেট্রি, উত্তর লন্ডন, ইংল্যান্ড:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এখানে অনেক মানুষের কবর দেয়া হয়। এই স্থানের বিষয়ে বিভিন্ন ধরণের কুসংস্কার রয়েছে। রাত বাড়ার সাথে সাথে এখানে শুরু হয় বিভিন্ন ধরণের ভয়ানক কার্যকলাপ। রাতে এখানে বিভিন্ন আধ্যাত্মিক বস্তু দেখা যায়। কিছুক্ষণ দেখার পর তারা আবার অদৃশ্য হয়ে যায়।
-সূত্র: আই লাভ ইন্ডিয়া।
মন্তব্য চালু নেই