বিএনপির সমস্যা এখন ম্যাডাম নিজেই
কল্পনা করা যাক, গুলশান পার্কের কাছে কয়েকজন মধ্যবয়সী পুরুষ ও নারী বসে ভিক্ষা চাচ্ছেন। তারা বিলাপ করে ভিক্ষা চাচ্ছেন— ‘আমাদের ভিক্ষা দেন তাহলে এ জীবন ও পরজীবনে অনেক উপকার পাবেন।’ তাদের বিলাপ শুনে একজন পথচারী তাদের সবাইকে একসঙ্গে ১০০ টাকার ভিক্ষা দিতে গেলে তারা সবাই একসঙ্গে চেঁচিয়ে উঠে বলে, ‘আমরা কি টাকার ফকির নাকি? সামনের পুরা বাড়িটাই আমরা কিনতে পারি। আমাদের কোনো কিছুর অভাব নাই। আমরা শুধু পদ ভিক্ষা চাই। এই পদ পেলে আমাদের রুটি-রোজগার আরও বেড়ে যাবে। সরকার আমাদের অনেক মূল্যায়ন করবে। ম্যাডামের সব খবরাখবর সংগ্রহ করার জন্য গোয়েন্দারা সব সময় আমাদের হাতে হাতে রাখবে।’
বর্তমানে বিএনপিতে পদের জন্য এভাবেই দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছেন বিএনপির অনেক তথাকথিত নেতা। যাদের সঙ্গে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কোনো সম্পর্ক নেই। সম্প্রতি কিশোরগঞ্জের এক ধনাট্য ব্যক্তিকে ময়মনসিংহ বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বানানো হয়েছে। অথচ কিশোরগঞ্জ জেলা ময়মনসিংহ বিভাগের বাইরে। ওই সহ-সাংগঠনিক সম্পাদককে ব্যঙ্গ করে কিশোরগঞ্জ জেলা সদরে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। এই হচ্ছে বিএনপির পকেট কমিটি গড়ার সার্বিক অবস্থা। একদিক দিয়ে ত্যাগী নেতারা জেলে যাচ্ছে বা পুলিশের হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য লুকিয়ে বেড়াচ্ছে, অন্যদিকে পকেট কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য অনেকে ভিক্ষা বা বাণিজ্য করে বেড়াচ্ছে। জানি না ম্যাডাম কাদের নিয়ে রাজনৈতিক শলাপরামর্শ করেন। তবে তিনি যে দলের গ্রহণযোগ্য নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করেন না তা জলবত্ তরলংয়ের মতোই সহজ।
জানি না ম্যাডামকে কে স্বপ্ন দেখায় এই বাংলা বছরেই দেশে নির্বাচন হবে এবং সে নির্বাচন নাকি জাতিসংঘের অধীনে হবে। ভাবতে ভালোই লাগে!! যে দেশে কোনো আন্দোলন নেই, নির্বাচিত মেয়রদের জেলে পুরলে কোনো প্রতিবাদ নেই, ম্যাডামকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখলেও বিএনপি টুঁ-শব্দ করতে পারে না সেখানে কোন যুক্তিতে জাতিসংঘ আগাম নির্বাচন করতে বলবে? আমেরিকার চালে পা দিয়ে আজ পর্যন্ত কোনো দেশে কেউ ক্ষমতায় যেতে পারেনি। এখন বাংলাদেশে তাদের লোককে ক্ষমতায় বসানোর যে পাঁয়তারা হচ্ছে তাতে ভারত, রাশিয়া, চীন কি চোখ বন্ধ করে বসে থাকবে? বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয় যে কেউ তাকিয়ে দেখবে না। বাংলাদেশ এখন সম্পদশালী দেশ। তার উপরে রয়েছে বিশাল জনগোষ্ঠী। ইরাক-লিবিয়ার জনতার ঢল থামাতে সমগ্র ইউরোপ যেভাবে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে বাংলাদেশের জনগণ যদি ছোটা শুরু করে তাহলে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে কোনো শক্তি তাদের আটকাতে পারবে না। কারও ভুলে যাওয়া উচিত নয়, কত লাখ বাংলাদেশি মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এখানে জঙ্গির উদ্ভব হলে তা সামলাতে কত মূল্য দিতে হবে তা নিশ্চয় অবহেলা করার সাহস কোনো শক্তিই দেখাবে না, এমনকি পরাশক্তিও না। বিষয়টি তাই খুবই স্পর্শকাতর। কাজেই যে কোনো আন্তর্জাতিক আলোচনায় বাংলাদেশে জঙ্গির উদ্ভব হওয়ার আশঙ্কা গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয়, যেখানে আগামী নির্বাচনের বিষয়টিও চলে আসে। সরকার খুবই সাফল্যের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মহলকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে তারা কোনো অবস্থাতেই জঙ্গি ইস্যুতে ছাড় দেবে না। কাজেই ২০১৯ সালের আগে নির্বাচনের আশা মরীচিকা মাত্র। তবে যে কোনো সময় বা আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা ১০০ ভাগ আছে যদি মাঠে বিএনপি শক্তিশালী হতে পারে। শক্তিশালী বিএনপি ছাড়া সরকারকে নত করানোর মতো আর কোনো শক্তি দেশে ও বিদেশে নেই।
বর্তমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষপটে বিএনপিকে গণতান্ত্রিকভাবে শক্তিশালী করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্রের বাইরে কোনো হঠকারী কার্যকলাপ করতে গেলেই বিএনপি জঙ্গির জালে আটকে যাবে। ম্যাডামকে আইএসের চক্রে ফেলে দিয়ে বিশ্বের কাছে নত করিয়ে দেবে। তখন জীবন নিয়ে বেঁচে যাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। তাই এখন আমাদের সবার আগে কাজ হওয়া উচিত দলকে সুসংগঠিত করা। গোপনে ম্যাডামকে দিয়ে একা একা পকেট কমিটি না বানিয়ে প্রকাশ্যে কমিটিগুলো গঠন করা উচিত। ম্যাডাম এখন যে প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন পদ বিলি করছেন তা অচিরেই বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে। দলে সর্বাগ্রে গণতন্ত্র আনতে হবে। গত সপ্তাহে তৃণমূল বিএনপির একটি নতুন কাঠামো দেওয়া হয়েছিল। এবার উপজেলা থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত বিভিন্ন কমিটির কাঠামো সবার সদয় বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করা হলো।
১. উপজেলা বিএনপি নির্বাহী কমিটি : প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে সাতজন নির্বাহী পদধারী এবং সাতজন সাথী সদস্য নিয়ে যত সংখ্যা হয় ততসংখ্যক সদস্যবিশিষ্ট উপজেলা বিএনপি গঠিত হবে। উপজেলা বিএনপি নিম্ন শর্ত অনুযায়ী কাজ করবে। ১.১। কমিটির মেয়াদ সর্বোচ্চ দুই বছর। প্রতি দুই বছর অন্তর মার্চ মাসে উপজেলা কমিটি গঠিত হবে। ১.২। কমিটি গঠিত হওয়ার পরের দ্বিতীয় মার্চের ৩১ তারিখে কমিটি আপনাআপনিই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ১.৩। উপজেলা বিএনপি নির্বাহী কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধির কোনো সুযোগ থাকবে না। ১.৪। উপজেলা বিএনপি কমিটির প্রথম সভায় সব সদস্যের কণ্ঠভোটে একজন সভাপতি, তিনজন সহ-সভাপতি, একজন সাধারণ সম্পাদক, একজন সাংগঠনিক সম্পাদক, একজন কোষাধ্যক্ষ, একজন দফতর সম্পাদক, তিনজন সহ-সম্পাদক নির্বাচিত করা হবে। বাকি সবাই নির্বাহী সদস্য থাকবে। ১.৫। উপজেলা পর্যায়ের সব অঙ্গসংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদাধিকারবলে উপজেলা বিএনপির কমিটির সদস্য থাকবে। ১.৬। উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সহ-সভাপতিত্রয়, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, দফতর সম্পাদক ও সম্পাদকত্রয়— এ ১১ জন পদাধিকারবলে জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হবে। এ ১১ জন একজন একজনকে সাথী হিসেবে আরও ১১ জনকে জেলা বিএনপির সদস্য নির্বাচিত করবে। ১.৭। মাসে অন্তত একবার (মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার বিকালে) উপজেলা কমিটি সভায় মিলিত হবে। ১.৮। একই নির্বাহী পদে কেউ দুই মেয়াদের বেশি থাকতে পারবে না। তবে দুই মেয়াদ অন্তর বা ভিন্ন পদে কোনো বাধা থাকবে না। ১.৯। কমিটি গঠনে কোনো অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে না। বৈধভাবে গঠিত উপজেলা কমিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেন্দ্রে নিবন্ধিত হয়ে যাবে। কোনো উপজেলা কমিটির বৈধতার প্রশ্ন দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট কমিটিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক যে রায় দেবে তাই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
২. জেলা বিএনপি নির্বাহী কমিটি : প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভা থেকে ১১ জন নির্বাহী পদধারী সদস্য ও ১১ জন সাথী সদস্যকে নিয়ে যত সংখ্যা হয় ততসংখ্যক সদস্যবিশিষ্ট জেলা বিএনপি গঠিত হবে। জেলা বিএনপি নিম্ন শর্ত অনুযায়ী কাজ করবে। ২.১। কমিটির মেয়াদ সর্বোচ্চ দুই বছর। প্রতি দুই বছর অন্তর এপ্রিল মাসে জেলা কমিটি গঠিত হবে। ২.২। কমিটি গঠিত হওয়ার পরের দ্বিতীয় এপ্রিলের ৩০ তারিখে কমিটি আপনাআপনিই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ২.৩। জেলা বিএনপি নির্বাহী কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধির কোনো সুযোগ থাকবে না। ২.৪। জেলা বিএনপি কমিটির প্রথম সভায় সব সদস্যের কণ্ঠভোটে একজন সভাপতি, পাঁচজন সহ-সভাপতি, একজন সাধারণ সম্পাদক, দুজন যুগ্ম সম্পাদক, একজন সাংগঠনিক সম্পাদক, একজন কোষাধ্যক্ষ, একজন দফতর সম্পাদক, পাঁচজন বিষয়/অঙ্গসংগঠনভিত্তিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হবে। বাকি সবাই নির্বাহী সদস্য থাকবে। ২.৫। জেলা পর্যায়ের অঙ্গসংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদাধিকারবলে উপজেলা বিএনপির কমিটির সদস্য থাকবে। ২.৬। জেলা বিএনপির সভাপতি, সহ-সভাপতিগণ, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদকগণ, সাংগঠনিক সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ ও দফতর সম্পাদক— এ ১১ জন পদাধিকারবলে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হবে। এ ১১ জন একজন একজনকে সাথী হিসেবে আরও ১১ জনকে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত করবে। ২.৭। মাসে অন্তত একবার (মাসের চতুর্থ শুক্রবার বিকালে) জেলা কমিটি সভায় মিলিত হবে। ২.৮। একই নির্বাহী পদে কেউ দুই মেয়াদের বেশি থাকতে পারবে না। তবে দুই মেয়াদ অন্তর বা ভিন্ন পদে কোনো বাধা থাকবে না। ২.৯। কমিটি গঠনে কোনো অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে না। বৈধভাবে গঠিত জেলা কমিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেন্দ্রে নিবন্ধিত হয়ে যাবে। কোনো জেলা কমিটির বৈধতার প্রশ্ন দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট কমিটিদের সঙ্গে আলোচনা করে জেলার দায়িত্বে থাকা যুগ্ম মহাসচিব যে রায় দেবে তাই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
৩. দেশের সব পৌরসভার বেলায় প্রতিটি পৌরসভাকে উপজেলার, পৌর ওয়ার্ডকে ইউনিয়নের এবং মহল্লাকে গ্রামের ওয়ার্ডের সমপর্যায় ধরে একই প্রক্রিয়ায় কমিটিসমূহ করতে হবে। পৌরসভার গলি বা পাড়াগুলোতে তৃণমূল কমিটি করতে হবে।
৪. মহানগরগুলোকেও একইভাবে জেলা পর্যায় ধরে ক্রমানুসারে অধস্তন কমিটিগুলো করে পাড়ায় পাড়ায় তৃণমূল কমিটি করতে হবে।
৫. জাতীয় নির্বাহী কমিটি : বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি দুই স্তরবিশিষ্ট হবে। প্রথম স্তর হবে সাধারণ নির্বাহী পরিষদ এবং দ্বিতীয় স্তর হবে জাতীয় নির্বাহী কমিটি। ৫.১। সাধারণ পরিষদ গঠিত হবে প্রতিটি জেলা ও মহানগর, প্রতিটি উপজেলা, পৌরসভা থেকে নির্বাচিত হয়ে আসা ২২ জন সদস্যের গুণিতক নিয়ে। ৫.২। দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে দলের চেয়ারপারসন ১০১ জনকে সাধারণ পরিষদের সদস্য মনোনয়ন দেবেন কিন্তু তারা জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হতে পারবেন না। তবে স্থায়ী কমিটির সদস্য হতে কোনো বাধা থাকবে না। ৫.৩। এ পরিষদের সভাপতি হবেন পদাধিকারবলে দলের চেয়ারপারসন। ৫.৪। জাতীয় নির্বাহী পরিষদের বছরে অন্তত একবার ঢাকা মহানগরে বা চেয়ারপারসনের নির্দেশে অন্য কোনো মহানগরে বা জেলা সদরে তিন-সাত দিনব্যাপী সভা অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত সভায় সব সদস্য নিজ খরচে যোগদান করবে এবং সব সদস্য উক্ত সভার জন্য অন্তত ১ হাজার টাকা নিবন্ধন ফি হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় অফিসে জমা দেবে যার বার্ষিক নিবন্ধিত অডিট হতে হবে। ৫.৫। জাতীয় নির্বাহী পরিষদ দুই বছরের জন্য প্রতি দুই বছর অন্তর মে মাসে নির্বাচিত হবে। ৫.৬। জাতীয় নির্বাহী পরিষদ তাদের প্রথম সভায় দলের চেয়ারপারসন, ভাইস চেয়ারম্যান, স্থায়ী কমিটির ১০ জন সদস্য, মহাসচিবসহ জাতীয় নির্বাহী কমিটির ৬৬% সদস্য গোপন ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবে। ৫.৭। জাতীয় নির্বাহী পরিষদের কোনো সদস্য চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হতে পারবে না। ৫.৮। দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হতে ইচ্ছুক কিন্তু পরিষদের নির্বাচনে অকৃতকার্য কোনো ব্যক্তি চেয়ারপারসনের কোটায় স্থায়ী কমিটির সদস্য হতে পারবে না।
৬। জাতীয় নির্বাহী কমিটি : দলের মহাসচিবকে সভাপতি করে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় নির্বাহী কমিটি হবে। মহাসচিবসহ ২১ জন নির্বাহী সদস্য সরাসরি জাতীয় নির্বাহী পরিষদের ভোটে দুই বছরের জন্য নির্বাচিত হবে। বাকি ১০ জন সদস্য দলের চেয়ারপারসন মনোনয়ন দেবে। ৬.১। জাতীয় নির্বাহী কমিটির পদ হবে একজন মহাসচিব এবং ৩০ জন যুগ্ম মহাসচিব যারা সরাসরি দলকে পরিচালিত করবে। ৬.২। জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা সপ্তাহে ন্যূনতম একটি হবে। ৬.৩। জাতীয় নির্বাহী কমিটি দলের চেয়ারপারসনের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। ৬.৪। জাতীয় নির্বাহী কমিটি দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত নিঃশর্তে মানতে বাধ্য থাকবে। ৬.৫। জাতীয় নির্বাহী পরিষদের জরুরি সভা আহ্বান করে দলের চেয়ারপারসন কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই যে কোনো সময় জাতীয় নির্বাহী কমিটি ভেঙে দিতে পারেন। ৬.৬। জাতীয় নির্বাহী কমিটি দুই বছরের জন্য প্রতি দুই বছর অন্তর জুন মাসে নির্বাচিত হবে। ৬.৭। জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভার কোরাম হতে ১২ জন সদস্য উপস্থিত থাকতে হবে।
৭. দলের স্থায়ী কমিটি : দলের চেয়ারপারসনকে সভাপতি করে অনূর্ধ্ব ১৯ সদস্যবিশিষ্ট দলের স্থায়ী কমিটি গঠিত হবে, যার ১২ জন জাতীয় নির্বাহী পরিষদ সরাসরি ভোটে নির্বাচিত করবে। বাকি ৬ জন চেয়ারপারসন পদাধিকারবলে মনোনয়ন দেবে। ৭.১। স্থায়ী কমিটি দুই বছরের জন্য দুই বছর অন্তর প্রতি জুলাই মাসে নির্বাচিত হবে। ৭.২। স্থায়ী কমিটির সভা চেয়ারপারসন যখন চাইবে তখনই করবে।
বিএনপিকে শক্তিশালী ও দৃশ্যমান গণতান্ত্রিক করার জন্য ম্যাডাম বরাবর এ রূপরেখা বিনয়ের সঙ্গে উপস্থাপন করা হলো। বিএনপি ম্যাডামকে ও তার পরিবারকে অনেক কিছু দিয়েছে। শহীদ জিয়া দিয়ে গেছেন একটি বিশাল রাজনৈতিক দল যার সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন ম্যাডাম, তার সন্তান ও আত্মীয়স্বজনরা। গত ৩৫ বছরে জিয়ার ঋণ কিন্তু আমরা কেউ পরিশোধ করিনি। জিয়াকে কম-বেশি বিক্রি করে খেয়েছি সবাই। আসুন অন্তত শহীদ জিয়ার বিদেহী আত্মার শান্তির জন্য তার হাতে গড়া দলটিকে সময়োপযোগী করে গড়ে তুলি। ম্যাডাম! বিনয়ের সঙ্গে মিনতি করছি বিএনপি আপনার একার সম্পত্তি নয়। এ দলে আমাদেরও শ্রম আছে। দলের বর্তমান অবস্থার জন্য শুধু আমরাই দায়ী নই, এর জন্য আপনার এবং আপনার সন্তানের দায়ও কম নয়। আপনি চিরকাল দলের চেয়ারপারসন থাকবেন না। যোগ্য উত্তরসূরি তৈরি করার দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনার, সে দায়িত্ব এখনো আপনি পালন করতে পারেননি।
আপনি জেলে বন্দী থাকা অবস্থায় সেদিন যখন মান্নান ভূঁইয়ার হাত থেকে একক প্রচেষ্টায় দলকে রক্ষা করতে পেরেছিলাম, ইনশা আল্লাহ আবারও নব্য মান্নানদের হাত থেকে দলকে রক্ষা করতে পারব। ভয় শুধু আপনাকে নিয়ে।
লেখক :
মেজর অব. মো. আখতারুজ্জামান
সাবেক সংসদ সদস্য
মন্তব্য চালু নেই