বান্ধবীকে ইভটিজিং, ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০
বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় গ্রুপের অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ক্যাম্পাসে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার বিকেলে ক্যাম্পাসে বসে থাকা অবস্থায় মেকানিক ৫ম বর্ষের ছাত্র মাহমুদ মুন্নার বান্ধবীকে ইভটিজিং করে ছাত্রলীগ কর্মী ইনস্টিটিউটের সিভিল বিভাগের ৫ম বর্ষের ছাত্র অনুপ হালদার। এসময় এর প্রতিবাদ করেন ছাত্র মাহমুদ মুন্না। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে অনুপ ক্ষিপ্ত হয়ে মুন্নাকে ইট দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই খবর পেয়ে মুন্নাকে মারধর করার প্রতিবাদ করে তার বন্ধুরা। কিন্তু এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের ওপরও হামলা চালায় অনুপ এবং তার সহযোগী ফাহিম, রায়হান, জাহিব, তামিমসহ ১০ থেকে ১৫ জন।
রাতে বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের আরো সমর্থক জড়ো হলে সেখানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে উভয় গ্রুপ ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রুবেল নামে এক ছাত্র জানান, ইভটিজিং ছাড়াও এ সংঘর্ষের ঘটনার নেপথ্যে আধিপত্তের বিষয়টি রয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন যাবত কলেজের প্রধান ছাত্রবাস এবং পার্শ্ববর্তী টুইন টাওয়ার নামক একটি মেসের দুই ছাত্রলীগ নেতার অনুসারীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
এর পরিপ্রেক্ষিতে টুইন টাওয়ার মেসে বসবাসকারি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা জসিমের অনুসারী মুন্নার বান্ধবীকে ইভটিজিং করে কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসের আবাসিক ছাত্র কলেজ ছাত্রলীগ নেতা রেজার অনুসারী অনুপ। মূলত সেই পূর্ব বিরোধ থেকে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে উভয় গ্রুপ। এতে উভয় গ্রুপের অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাখাওয়াত হোসেন জানান, ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে ছাত্রদের মধ্যে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে বিষয়টি সম্পর্কে ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ড. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘ঝামেলার কথা শুনেছি। কিন্তু সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’
ক্যাম্পাস সূত্র জানিয়েছে, পূর্বেও ছাত্রলীগের এ দুই গ্রুপের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। এছাড়া এ দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে এর আগে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পার্শ্ববর্তী বসতবাড়িও ভাঙচুর করা হয়। তবে এবারের সংঘর্ষের পেছনে স্থানীয় মেহেদী নামের এক যুবলীগ নামধারী কর্মীর ইন্ধন রয়েছে বলে জানা গেছে।
মন্তব্য চালু নেই