বাড্ডার প্রিমিয়ার প্লাজার আগুন নিয়ন্ত্রণে
রাজধানীর উত্তর বাড্ডার বিটিআই প্রিমিয়ার প্লাজায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ ২৪টি ইউনিট দীর্ঘ প্রায় ৭ ঘণ্টা চেষ্টার পর বুধবার (২৯ জুন) সকাল পৌনে ১০টার দিকে এ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস।
ঢাকা মহানগর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) মোজাম্মেল হক বুধবার (২৯ জুন) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাত তিনটার দিকে আমরা বাড্ডায় একটি ভবনের ফার্নিচারের দোকানে আগুন লাগার খবর পাই। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা ওই ভবনের কাছে চলে যাই এবং আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি। আগুন লাগার খবর জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে ভবনের লোকজন ছাদের ওপরে চলে যান। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাদের ছাদ থেকে নিচে নামিয়ে আনেন।
তিনি বলেন, এ মুহূর্তে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা যাচ্ছে না। এ জন্য ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহা-পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী মোহাম্মদ খান ভবনটির আগুন নিয়ন্ত্রণ শেষে সাংবাদিকদের বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। সেখানে পানি সল্পতা ছিল, ভবনের ফটকে তালা দেওয়া ছিল এবং ভবন পর্যন্ত পৌঁছাতে রাস্তার কারণে বেশ সমস্যা হয়েছিল। আমাদের ২৮টি ইউনিট সর্বাত্মক চেষ্টার পর সকাল ৫টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে আগুনের তাপে ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, আগুনের ঘটনা সম্পর্কে তৌহিদ ইসলাম নামে একজন আমাকে প্রথমে অবহিত করে। আমি তাকে বলি, কাউকে নিচে নামতে দেবেন না, লিফট বন্ধ রাখবেন এবং সবাই দ্রুত ছাদে অবস্থান নেন। আমার কথা মত কাজ করায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
আগুনের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আগুনের কারণ সম্পর্কে তদন্তের পরই বলা যাবে। ঘটনায় ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছি। ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে কমিটি।
আলি মোহাম্মদ খান আরও বলেন, ‘যে কোনো অগ্নিকাণ্ডে বা দুর্ঘটনায় ব্যক্তি সচেতনতা সবচেয়ে জরুরী। কারণ বাড়ি বানাতে গেলে ফায়ার সার্ভিসের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সড়কের দৈর্ঘ্য ৯ ফুট রাখতে বলা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি সড়কের প্রবেশ করতে এবং কাজ করতে সড়কের দৈর্ঘ্য ১৫ ফুট দরকার। কিন্তু নগরে অধিকাংশ সড়কের দৈর্ঘ্য ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির অনুকূলে নয়। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ বেগ পেতে হয়।’
ঢাকা মহানগর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) মোজাম্মেল হক জানান, ভবনটি অপরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে। এ কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতো বড় ভবনে আগুন নির্বাপণের জন্য নিজেদের কোনো ব্যবস্থা নেই। নেই কোনো পানি সরবরাহের ব্যবস্থা। ফলে আশপাশের বাড়ি, পাশের ঝিল, খাল থেকে পানি সরবরাহ করতে হয়েছে। আগুন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণের পর তদন্ত করে আগুনের সূত্রপাত জানা যাবে। এরপর বিল্ডিংয়ের ডেভেলপার কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও ডাম্পিংয়ের কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, ওই ভবন থেকে মোট ১২০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তারা সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। এ পর্যন্ত কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য চালু নেই