বর ৯, কনে ৬২!
শিরোনাম পড়ে মনে হবে, আরে ধুর! এ আবার হয় নাকি। যতসব গাঁজাখুরি গল্প। আরে মশাই দাঁড়ান, যাচ্ছেন কোথায়? পুরো ঘটনা তো শুনুন!
গল্পের মতো শোনালেও ঘটনা সত্যি। আমাদের গল্পের নায়কের নাম সানেই মাসিলিলা। বাবুর বয়স এখন নয়। এ বয়সে বিয়েবাড়িতে তার বেলুন নিয়ে খেলে বেড়ানোর কথা। সেখানে তিনি দিব্যি বরটি সেজে বিয়ে করতে চলে এসেছেন।
ঠিক আছে মানা গেল। অনেক বাবা-মা শখ করে বাচ্চাদের বিয়ে দেন, মানা যায়। তাই বলে কনের বয়স ৬২! এটা হজম হবে না।
চমকে আছেন তো? বেশ, চমকিত অবস্থায় আরেকটি তথ্য শুনে নিন- এটি আমাদের বরবাবুর দ্বিতীয় বিয়ে।
বিয়েটা গত বছর হলেও, মিরর বিষয়টি জানিয়েছে শুক্রবার। আসলে এই তাজ্জব করা ঘটনাটি প্রচারের আলোয় আসে সম্প্রতি।
যাইহোক, বিয়ের কথা বলি। বিয়ের দিন বরবাবু রুপালি স্যুট পরে কনে হেলেন সাবাঙ্গুর হাত ধরে বিয়ে করতে আসেন। পাঁচ সন্তানের জননী মা হেলেন সাবাঙ্গুর বাকি সন্তানেরা ২৮ থেকে ৩৮ বছরের। বিয়েতে অতিথি ছিলেন প্রায় ১০০ জন।
বিয়ে নিয়ে স্কুলবালক বরের ভাষ্য ছিল, তিনি বিয়েটি আইনানুগভাবেই করছেন। কিন্তু তার সাউথ আফ্রিকার জিমহাঙ্গুই গ্রামবাসীরা এটিকে ‘বিরক্তি’ হিসেবেই দেখেছিলেন।
হেলেনের দীর্ঘদিনের স্বামী আলফ্রেড সাবাঙ্গু অবশ্য এটার একটা যুতসই জবাব দিয়েছিলেন, আমার ছেলেরা ও আমি খুশি, কারণ ছেলেটির বিয়ে করতে কোনো সমস্যা হয়নি। আর এটা নিয়ে অন্যরা কী বলল তাতে আমার কিছু যায় আসে না।
বিয়ের ক্ষেত্রে সাউথ আফ্রিকান ঐতিহ্য মানলে আইনসদ্ধিভাবেও বৈধ করার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন বরবাবু।
নতুন বিয়ে করলেও বর আবার পড়াশোনার ব্যাপারে সুবোধ বালক। তার নিজের মুখ থেকেই শুনুন, হেলেনকে বিয়ে করে আমি খুশি। কিন্তু আমি স্কুলে গিয়ে কঠোর পড়াশোনা করতে চাই।
তা বর সানেই বাবু, বিয়ের জন্য আরেকটু অপেক্ষা কী করা যেত না? আর ৬২ বছর বয়সী হেলেনই কেন?
বরের জবাব ছিল, আমি বড় হলে আমার বয়সী কোনো মেয়েকে বিয়ে করব। আমি হেলেনকে বিয়ে করেছি কারণ আমি তাকে ভালোবাসি। যদিও সব সময় আমরা একসাথে থাকতে পারব না। আমার মা যেখানে কাজ করে সেখানে আমাদের দেখা হয়।
অনেক তো হলো বরের কথা! এবার কনের কথা শুনি। বিয়ে নিয়ে কী বলছেন আবর্জনা পরিস্কারকারী হেলেন, আমি খুশি যে সানেই আমার ও আমার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে।
একদিন সানেই বড় হবে। সে বিয়ে করবে এবং তার নিজের বাচ্চা হবে। আমরা এখন খেলছি, যোগ করলেন নববধূ।
হেলেনের শাশুড়ি অবশ্য তার থেকে ১৯ বছরের ছোট। ৪৭ বছর বয়সী মিসেস মাসিলিলা বলেন, বিয়ে করে সানেই খুশি। সে মোটেও লজ্জিত নয়।
এতক্ষণে সবার মনে নিশ্চয় একটি প্রশ্নই উঁকি দিচ্ছে। কেমন ছিল তাদের এই অসমবয়সী সংসার?
উত্তরটা বরং শুনে নিন বরের মায়ের কাছ থেকেই, বিয়ের পর সবাই প্রশ্ন করত- তারা কি একসাথে থাকছে, বাচ্চা নেবে? আমি তাদের বলতাম, বিয়ের পর সবকিছুই আগের মতই আছে, কিছুই পরিবর্তন হয়নি।
শুনে মন খারাপ হলো? বোধহয় রোমন্টিক কিছু শুনতে চেয়েছিলেন, কিন্তু কোথায় কী! না, অতটা হতাশ হবার কিছু নেই মশাই।
সানেই বিয়ের পর ভেন্ডা চলে যায় কারণ সে একটি নতুন ভাষা শিখতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা খুব কাছাকাছি আছে। আমাদের পরিবারের সবাই খুব কাছাকাছি থাকে, যোগ করলেন এ বালক বরের মা।
শুনলেন তো, তারা খুব কাছাকাছি আছে! এবার ঝটপট তাদের জন্য শুভ কামনাটি সেরে ফেলুন।
মন্তব্য চালু নেই