বরিশাল নৌ-বন্দরে পল্টুন সংকট ঈদে যাত্রীদের দুর্ভোগের আশংকা
পল্টুন সংকটের কারণে আসন্ন ঈদ-উল আযহায় বরিশাল নৌ-বন্দরে যাত্রীদের দুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে। ঢাকা-বরিশাল নৌপথে বেসরকারি এবং রাষ্ট্রীয় নৌযান সংস্থা বিআইডবি-উটিসির যাত্রীবাহী নৌযান বৃদ্ধি পেলেও বৃদ্ধি করা হয়নি নৌ-যান ভেড়ানোর পল্টুন। এজন্য (পল্টুন বৃদ্ধি) বিআইডবি¬উটিএর বরিশাল কার্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় দপ্তরে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ঈদের বিশেষ সার্ভিসে নৌযানের সংখ্যা দ্বিগুণ ও যাত্রী কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বরিশাল বিআইডবি¬উটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক শাখার উপ-পরিচালক আবুল বাশার মজুমদার পল্টুন সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, নৌ-বন্দরে ডাবল ডেকার লঞ্চ ও স্টিমার ভেড়ানোর জন্য বর্তমানে ৩৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের তিনটি পল্টুন রয়েছে। এর সঙ্গে ১২০ ফুট দৈর্ঘ্যরে আরও একটি পল্টুন স্থাপনের জন্য সর্বশেষ গত ২৫ আগষ্ট কেন্দ্রীয় দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। অদ্যাবধি নতুন কোন পল্টুন স্থাপন করা হয়নি।
নৌ-বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-বরিশাল নৌপথে আগে বেসরকারি যাত্রীবাহী লঞ্চ ছিল ১৩টি। বিআইডব্লি-উটিসির স্টিমার ছিল ৫টি। নৌবন্দরের ১নম্বর পল্টুন স্টিমারের জন্য এবং ২ ও ৩ নম্বর পল্টুন বেসরকারি ডাবল ডেকার লঞ্চগুলোর জন্য নির্ধারিত করা রয়েছে। গত এক বছরের মধ্যে বেসরকারি কোম্পানীগুলো আরও ২টি বৃহদাকারের লঞ্চ (সুরভী-৯ ও এমভি ফারহান-৮) ঢাকা-বরিশাল নৌপথে চালু করেছে।
অপরদিকে বিআইডব্লি¬উটিসির বহরে যুক্ত হয়েছে বড় দুটি নৌযান এমভি বাঙালি ও এমভি মধুমতী। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে দিবা সার্ভিসের দুটি বড় জাহাজ গ্রীনলাইন-২ ও ৩।
সূত্রে আরও জানা গেছে, ২৪০ফুট দৈর্ঘ্যরে জাহাজ এমভি বাঙালি ও এমভি মধুমতি সাইডভাবে ভেড়ানোর কারণে বিআইডবি¬উটিসির জন্য নির্ধারিত ১২০ফুট দৈর্ঘ্যরে ১টি পল্টুনে তাদের স্থান সংকুলন হচ্ছে না। অন্যদিকে বেসরকারি লঞ্চের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের জন্য নির্ধারিত দুটি পল্টুনও যথেষ্ট নয়। মঙ্গলবার উদ্বোধন হওয়া গ্রীনলাইন-২ ও ৩ জাহাজও ভেড়ানো হবে একই পল্টুনে।
সূত্রটি আরও জানিয়েছেন, আসন্ন ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে বিশেষ সার্ভিসে একসাথে ১০-১২টি লঞ্চ বরিশাল নৌ-বন্দরে যাত্রী পরিবহন করবে। বিআইডব্লি¬উটিসির জাহাজ থাকবে কমপক্ষে দুটি। এতো সংখ্যক নৌযান একসাথে ভেড়ানোর মতো পল্টুন না থাকায় যাত্রীরা পড়বেন চরম বিপাকে। এমতাবস্থায় একটির পেছনে আর একটি লঞ্চ ভেড়ানো হলে যাত্রী-ওঠানামার সময়ে দুর্ঘটনা এমনকি প্রাণহানীরও আশঙ্কা রয়েছে।
এমভি পারাবত-১০ লঞ্চের মাস্টার শামীম হোসেন বলেন, বরিশাল নৌ-বন্দরে লঞ্চ ভেড়াতে তাদের খুবই সমস্যা হচ্ছে। আসন্ন ঈদে লঞ্চের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে এ সমস্যা আরও প্রকট হবে। বিআইডব্লি¬উটিসির বরিশালের সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ বলেন, নৌবন্দরে স্টীমারে জন্য একটি নির্ধারিত পল্টুন রয়েছে। স¯প্রতি স্টিমারের পল্টুন দখল করে ব্যক্তিমালিকানাধীন লঞ্চ ভেড়ানো হচ্ছে।
এ অবস্থায় স্টিমারের যাত্রী ওঠানামা করতে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আসন্ন ঈদে পল্টুন সংখ্যা বাড়ানো না হলে যাত্রীরা নিশ্চিতভাবে আরও দুর্ভোগে পরবেন। লঞ্চ মালিকদের সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌযান সংস্থার বরিশাল শাখার সভাপতি আজিজুল হক আক্কাস বলেন, নতুন পল্টুন স্থাপন ছাড়া এ সংকট নিরসন করা যাবে না।
তাই নতুন পল্টুন স্থাপনের জন্য তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকেও বিআইডব্লি-উটিএর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মন্তব্য চালু নেই