বরিশালে সাংবাদিক হত্যা মামলায় পিতা-পুত্রের ফাঁসি
কল্যান কুমার চন্দ, বরিশাল: বরিশালের আলোচিত সাংবাদিক মনির হোসেন রাঢ়ী হত্যা মামলায় পিতা ও পুত্রের ফাঁসির রায় এবং উভয়কে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক। একইসাথে মামলার অপর এক আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সুদীপ্ত দাস দন্ডপ্রাপ্তদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্তরা হলো, আলাউদ্দিন রাঢ়ী ও তার ছোট পুত্র রাসেল রাঢ়ী। খালাসপ্রাপ্ত মামলার অন্য আসামি আলাউদ্দিন রাঢ়ীর বড় পুত্র সোহাগ রাঢ়ী। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোঃ গিয়াস উদ্দিন কাবুল জানান, মুলাদী পৌর এলাকার ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা দলিল উদ্দিন মাস্টার ও পার্শ্ববর্তী আনোয়ার হোসেনের বাড়ির চলাচলের একমাত্র পথ বন্ধ করতে সীমানা প্রাচীর নির্মান করে আলাউদ্দিন রাঢ়ী ও তার সন্ত্রাসী পুত্ররা।
এতে চলাচলের পথ বন্ধ হওয়ায় ভূক্তভোগীরা মুলাদী প্রেসক্লাবের তৎকালীন সভাপতি সাংবাদিক মনির হোসেন রাঢ়ীকে বিষয়টি জানান। ২০১১ সালের ২১ ডিসেম্বর বিকেলে সাংবাদিক মনির ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয়কে অনুরোধ করেন।
এসময় মনির ওই সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ভূক্তভোগীদের চলাচলের রাস্তা বাদ দিয়ে প্রাচীর নির্মানের অনুরোধ করেন। এনিয়ে সাংবাদিক মনির রাঢ়ীর সাথে আলাউদ্দিন রাঢ়ী ও তার পরিবারের সদস্যদের বাগ্বিতন্ডা হয়। একপর্যায় আলাউদ্দিন রাঢ়ীর নির্দেশে তার সন্ত্রাসী পুত্ররা মনির রাঢ়ীকে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয়রা মনির হোসেনকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে ওইদিনই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে রাত ১টার দিকে সাংবাদিক মনির মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় সাংবাদিক মনির হোসেনের ভাই জসিম উদ্দিন ওরফে খোকা রাঢ়ী বাদী হয়ে মুলাদী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মোঃ কায়কোবাদ ৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এরমধ্যে ২০১৪ সালে ২ জুলাই আসামি মোতালেব রাঢ়ী মারা যান এবং অপর আসামি আলেয়া বেগমকে ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। মামলার ১৭ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক উল্লেখিত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মামলার বাদি ও বরিশালের সাংবাদিক সমাজ সন্তুটি প্রকাশ করেছেন।
মন্তব্য চালু নেই