‘বইমেলায় এলে আত্মবিশ্বাস বলীয়ান হয়’

‘এতগুলো বই বের হচ্ছে, তরুণরা বই কিনছে এর থেকে আনন্দদায়ক আর কী হতে পারে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। বইমেলায় এলে সেই আত্মবিশ্বাসটাই বলীয়ান হয়।’

শহীদ ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরীর ‘এ লড়াই অনিবার্য ছিল’ নামক প্রবন্ধের মোড়ক উন্মোচন শেষে এমন অনুভূতি প্রকাশ করেন। বইমেলা নিয়ে এমন আত্মবিশ্বাস ফুটে উঠেছে নবীন-প্রবীণ সব লেখকের মাঝেও। অন্যদিকে বইপ্রেমীদের মাঝেও রয়েছে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। কেননা, এ যে প্রাণের মেলা।

অমর একুশে বইমেলার পঞ্চম দিনে রবিবার বইপ্রেমীদের ভিড় বাড়ে। এদিন লেখক, পাঠক আর দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। তবে মেলা এখনো পুরোপুরি ভিড় দেখেনি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মাওলা ব্রাদার্সের বিক্রয়কর্মী মারিয়া সুলতানা বলেন, ‘মেলায় আমরা ভালোই সাড়া পাচ্ছি। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। মাওলা ব্রাদাস থেকে এবার বেশ কয়েকটি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ডা. নুজহাত চৌধুরীর ‘এ লড়াই অনিবার্য ছিল’ অন্যতম। এছাড়া মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘কাবিল কোহকাফী’, হরি শংকর জলদাসের ‘ইরাবতী’, মহাদেব সাহার ‘আমার কবিতা গ্রাম’ এবং সৈয়দ শামসুল হকের ‘রক্তগোলাপ’ ও ‘সীমানা ছাড়িয়ে’।’

মেলার বাংলা একাডেমি প্রান্তরে ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটির (ডিআরইউ) স্টলে সংগঠনের সদস্যদের বইয়ের পসরা সাজানো হয়েছে। ডিআরইউ স্টলে কথা হয় সংগঠনটির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মিজান চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এখানে বিভিন্ন প্রকাশনীতে প্রকাশিত আমাদের সদস্যদের বইগুলো বিক্রি করা হয়। ডিআরইউ স্টলে এবার এসেছে আমিরুল মোমেনিন মানিকের ‘সাংবাদিক সাংঘাতিক’, মাইদুর রহমান রুবেলের ‘ভূতের রাজ্য’।’

মেলায় নজরুল মঞ্চের পাশেই রয়েছে স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা। যেখানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য বই প্রকাশিত হয়েছে। স্টলটিতে উৎসুক দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। স্টলটি থেকে প্রকাশিত হয়েছে মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘দলের নাম ব্লাক ড্রাগন’, কাউসার চৌধুরীর ‘শোভনের একাত্তর’।

মেলায় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের গবেষণা শাখার উদ্যোগে যুবজাগরণ থেকে প্রকাশিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচিত প্রবন্ধ।

মিরপুর থেকে বইমেলায় এসেছে স্কুলছাত্রী হাবিবা ও ছাবেকুন নাহার। জানতে চাইলে তারা বলল, ‘মেলা ঘুরে ঘুরে দেখছি। এখনো কোনো বই কেনা হয়নি। বইয়ের লিস্ট করেছি। মেলার ১০ম দিনে বইগুলো কিনবো।’

কথা হয় বাংলা একাডেমির সচিব মো. আনোয়ার হোসাইনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এবারের মেলা চমৎকারভাবে সাজানো হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে দুই স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মেলা আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। আশা করছি, যেকোনো বারের তুলনায় এবার বেশি বই বিক্রি হবে।’

বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আজ নতুন বই এসেছে ৮৭টি। মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আহসান হাবীব জন্মশতবর্ষ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি তুষার দাশ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ড. অনু হোসেন ও ড. তারেক রেজা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক জুলফিকার মতিন।

আগামীকাল মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন স্বরোচিষ সরকার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন অধ্যাপক আহমদ কবির, অধ্যাপক দানীউল হক ও হাকিম আরিফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ড. গোলাম মুরশিদ। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।



মন্তব্য চালু নেই