ফুটওভার ব্রিজে পারাপারের সকল প্রচেষ্টা বিফলে যাচ্ছে!
ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা পারাপার বন্ধে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ফুটওভার ব্রিজ তৈরি করা হলেও নগরবাসীর যথার্থ ব্যবহার থেকে সেগুলো বঞ্চিত হচ্ছে। ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে রাস্তার আইল্যান্ড টপকে, সুযোগ বুঝে দ্রুতগতির যানবাহনের সামনে দিয়েই দৌড়ে পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা। এক সময়ের মাদকাসক্ত ও হকারদের দখলে থাকা ফুটওভার ব্রিজগুলো নগরবাসীকে ব্যবহারে উদ্ধুদ্ধ করতে নানা রঙের ফুল দিয়ে সাজিয়েছেন ঢাকার দুই মেয়র। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাদের সকল প্রচেষ্টাই বিফলে যাচ্ছে!
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বৃহস্পতিবার তার ফেসবুকে পেইজে ঝুঁকিপূর্ণভাবে মানুষের রাস্তা পারাপারের ছবি শেয়ার করেছেন।
ছবিগুলোতে দেখা যায়, অদূরে ফুটওভারব্রিজ থাকলেও মানুষগুলো ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন। আইল্যান্ডের ব্যারিকেডের উপর দিয়ে পুরুষদের পাশাপাশি মেয়েরারও পার হচ্ছেন। রাস্তায় বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনের মধ্যে দিয়েই পারাপার হচ্ছেন তারা।
আমরা ঢাকা ফেসবুক পেইজ থেকে শেয়ার করা ছবিগুলোর ক্যাপশনে লেখা, ‘আমরা পথচারীবান্ধব সড়ক চাই। কিন্তু সেই সাথে পথচারীদেরও সচেতনতা চাই। ঢাকা রাস্তায় রাস্তা পারাপারে ফুটওভারব্রিজ, আন্ডারপাস ও ফুটপাত ব্যাবহার না করার প্রবণতা উঠে এসেছে নিচের ছবিগুলোতে। ছবিগুলো সামস মুহাম্মাদ আনোয়ার শহীদ ফেসবুকে পোস্ট করছেন।’
এদিকে, পথচারীরা কেন আইন মানছে না? কেনই বা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছে? বিষয়গুলো নিয়ে ডিএমপির উত্তর ট্রাফিকের এডিসি হুমায়রা পারভীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জাগো নিউজকে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের এটা জন্মগত স্বভাব। আইন না মানার প্রবণতা আগে থেকেই ছিল। সে কারণে আপনি চাইলেও রাতারাতি এ দৃশ্য বদলে যাবে না।
তিনি আরো বলেন, “আপনি বনানীতে আসেন দেখবেন। মেয়র মহোদয় নিজে ফুটওভার ব্রিজ করে দিয়েছেন। স্কেলেটর করেছেন। তবুও মানুষ ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করছেন না। ১০/২০ গজ হেঁটে মানুষ ফুটওভার ব্রিজে উঠতে চায় না।”
আইন মানতে আপনারা কি ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছেন? -জানতে চাইলে এ নারী ট্রাফিক কর্মকর্তা বলেন, দেখুন আমরা চাইলেই হার্ড লাইনে যেতে পারি। এতে করে মানুষ হয়তো আইন মানতে বাধ্য হবে। তবে এতে পুলিশের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের অবনতি হবে। আমরা বরং দুটোই করছি। কোথাও চাপ দিচ্ছি কোথাও সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষকে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে অবহিত করছি।
রাজধানীর বড় বড় ক্রসিং এলাকাগুলোতে রশি লাগিয়ে যত্রতত্র মানুষের রাস্তা পারাপারকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া লিফলেট বিতরণ, ব্যানার, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আশা করছি ধীরে ধীরে মানুষ সচেতন হয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদিকে, (বৃহস্পতিবার) দুপুরে রাজধানীর গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে এক অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীরা যেই হোক, যতো বড় ক্ষমতাশালী হোক, তার অবস্থান যাই হোক, আমাদের ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে। এটা অব্যাহত থাকবে। আমরা উল্টোপথে কোনো গাড়ী যেতে দেব না।
মন্তব্য চালু নেই