প্রেমিকের বিরুদ্ধেই পর্নোগ্রাফির অভিযোগ
সাবেক প্রেমিকের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের একটি আদালতে পর্নোগ্রাফির অভিযোগ এনে সুবিচার চাইলেন এক ক্রিসি চেম্বার নামে এক মার্কিন নারী। ইংল্যান্ডের ইতিহাসে ক্রিসিই একমাত্র নারী যিনি এমন অভিযোগ তুললেন।
ক্রিসির অভিযোগ, ক্রিসিকে না জানিয়েই তার সাবেক প্রেমিক তাকে নিয়ে সেক্সটেপ তৈরি করেছে এবং তার অনুমতি ছাড়াই সে একটি পর্ন সাইটে তা প্রকাশ করেছে।
গার্ডিয়ানের তৈরি করা একটি ডকুমেন্টারিতে এ কথা জানান ক্রিসি। তবে প্রামাণ্যচিত্রে তার সাবেক প্রেমিকের কোনো পরিচয় দেয়া হয়নি। তবে তার প্রেমিক ব্রিটিশ নাগরিক হওয়ায় বিচারের জন্য ব্রিটিশ আদালতেই দারস্থ হতে হয় ক্রিসিকে।
ক্রিসির যখন ১৮ বছর বয়স তখনই তাদের সম্পর্কে ভাঙ্গন হয়। কিন্তু ভাঙ্গনের দিনই ক্রিসিকে ড্রিঙ্কের প্রস্তাব দেয় তার প্রেমিক।
ক্রিসি বলেন মদ্যপানের পর তিনি একদমই বোধশক্তি হারিয়ে ফেলেন এবং তার প্রেমিকের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু তার প্রেমিক সম্পূর্ণ স্বজ্ঞানে তাদের যৌনমিলনের ভিডিও করে।
তাদের ব্রেক-আপ এর এক বছর পরে ভিডিওটি পর্ন সাইটে আপলোড করা হয়। এবং এটি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। কিন্তু তখনও এসবের কিছুই জানতেন না ক্রিসি চেম্বার। ইতোমধ্যে তিনি নতুন এক সম্পর্কে জড়ান। ব্রিয়া কাম নামের এক সফল ইউটিউব কনটেন্ট প্রোভাইডারের সঙ্গে তার সম্পর্ক এখনও অটুট।
তাদের ইউটিউব চ্যানেল ‘ব্রিয়া এন্ড ক্রিসি’ এর প্রায় ৫ লক্ষ্য অনুসারী রয়েছে। এবং একটা সময় তাদের এই চ্যানেলে একটি কমেন্টের মাধ্যমেই ক্রিসি প্রতম তার ভিডিওটির ব্যাপারে জানতে পারে।
কমেন্টটি ছিলো এমন, ‘আমার তোমার প্রতি অনেক সম্মান ছিলো। কিন্তু তুমি এখন একজন পর্নস্টার, আমি এখন কিভাবে তোমাকে সম্মান করবো।’
এরপর আস্তে আস্তে তাদের চ্যানেলে অনুসারী কমতে থাকে। এবং তাদের আয়ও কমে যায়। ক্রিসির পর্ন ভিডিওটি ৩৫ টি পর্নগ্রাফিক সাইটে আপলোড করা হয়েছে।
কিন্তু ইংল্যান্ডের বিচার ব্যবস্থার ওপর ক্ষোভ জানিয়ে ক্রিসির আইনজীবী এ্যানা অলিভারিস গার্ডিয়ানকে জানান, ‘এই সমস্যা সমাধানে আপনার অনেক অর্থ খরচ করতে হবে। আসলে এখন টাকাই সুবিচার আনে।’
অলিভারিস এর আগেও নারী অধিকার নিয়ে কাজ করেছেন। তাই তিনি ‘ডেট রেড’ কথাটির সঙ্গে তিনি আগে থেকেই পরিচিত এবং এর ব্যাপারে আইনী প্রক্রিয়াও তিনি জানেন।
এপ্রিলে এই রেভেঞ্জ-পর্ন আইনটি ইংল্যান্ডে শুরু হয়। এই আইন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যই হলো কারো ব্যক্তিগত ছবি কিংবা যৌনমিলনের ভিডিও তার অনুমতি ছাড়া প্রকাশ করা যাবেনা। কিন্তু এই আইনটি ক্রিসির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যাচ্ছে না কারণ তার ভিডিওটি কয়েক বছর আগে আপলোড করা হয়েছিলো। তাই এই মামলাটি নিয়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।
এছাড়াও ক্রিসির করা মানহানি মামলারও কোনো সুষ্ঠু প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যাচ্ছে না। তার এই ভিডিওর ফলে ক্রিসি ঠিক কতটা ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন তা বের করার কোনো সহজ প্রক্রিয়া নেই।
অলিভারিস জানান, ‘এই মামলাটির জন্য যা করা প্রয়োজন আমরা করবো। আমরা জানি আমাদের কি করা উচিত। আমরা জানি এটি ঠিক নয়, আমরা জানি সমাজ এটা গ্রহণ করবে না। তবুও এরকম কাজ করে দোষীরা পালিয়ে যাচ্ছে।’
ক্রিসির প্রেমিকের উপর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে আদালত। ইতোমধ্যে তারা নগর পুলিশের কাছে তাদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে দিয়েছে। তবে ক্রিসি এখনো অপেক্ষা করছে যে দেখার জন্য যে তার প্রেমিকের কি শাস্তি হয়।
ক্রিসি জানায়, আমি ভাবতে পারি না, আমার মতো ভুক্তভোগী আরেকজন কেমন অনুভব করছে যার পেছনে আমার মতো সমর্থন নেই।
এবিষয়ে তার প্রেমিকের মন্তব্য নেয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানায় গার্ডিয়ান।
মন্তব্য চালু নেই