শুক্রবার সারাদেশে বিএনপির বিক্ষোভ ।। সংবাদ সম্মেলনে ফকরুল

‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে’ হামলার লক্ষ্য ছিল খালেদার গাড়িবহর

বিএনপির মিছিলে নয় বরং খালেদা জিয়ার গাড়িবহরেই ছাত্রলীগের হামলার লক্ষ্য ছিল বলে দাবি করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা করাই ছিল এর মূল লক্ষ্য। যে কারণে বারবার চেষ্টা করা হয়েছে তার গাড়িবহরের সিকিউরিটির গাড়িগুলোকে বহর থেকে বিচ্ছিন্ন করার।’

বুধবার দুপুরে খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা উপলক্ষে বিএনপি মিছিল বের করলে অতর্কিতে হামলা করে ছাত্রলীগ। এর প্রতিবাদে বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন ধরেই অবৈধ সরকারের মন্ত্রীরা নানাভাবে খালেদা জিয়ার উদ্দেশে অশালীন বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। সাথে বিভিন্ন হুমকি ধামকিও ছিল। যারই ফল আজকের এই হামলা।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘পুলিশ র‌্যাবের ছত্রছায়ায় এ হামলা চালানো হয়েছে। এতে ছাত্রলীগের কর্মীরাসহ সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা অংশ নেয়। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। এ থেকে তাদের বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।’

মির্জা ফখরুল দাবি করেন, এ হামলায় ৬শর বেশি মানুষ আহত হয়েছে। যেখানে ১০০ জনের মতো নেতাকর্মী মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। এছাড়া ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ হামলার নির্দেশ দিয়ে থাকতে পারেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। যুক্তি দেখিয়ে বলেন, ‘২৭ ডিসেম্বর আমরা গাজীপুরে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছি। আর গতকাল কারা দিবস উপলক্ষে কাশিমপুরে যান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আসার পর থেকেই আওয়ামী লীগ এমন আচরণ করছে।’

শুক্রবার সারাদেশে বিএনপির বিক্ষোভ
নেতাকর্মীদের মিছিলে ছাত্রলীগের হামলা এবং এতে ছয় শতাধিক আহত ও অর্ধশতাধিক গ্রেপ্তার হওয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার সারা দেশে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ দেখাবে বিএনপি।

বুধবার দুপুরে নেতাকর্মীদের মিছিলে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে বিকেলে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আগামী শুক্রবার সারাদেশের জেলা সদর এবং ঢাকা মহানগরে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। প্রথমে আগামীকাল বৃহষ্পতিবার বিক্ষোভের ঘোষনা দেয়া হলেও পরে তা শুক্রবার নির্ধারণ করা হয়।

এদিন বকশিবাজারে অস্থায়ী আদালতে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হাজিরা দেয়া উপলক্ষে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে যাচ্ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল দাবি করেন, ওই হামলায় ছয় শতাধিক আহত এবং অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ হামলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ থাকতে পারে এবং খালেদা জিয়ার গাড়িবহরই হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

হামলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ থাকতে পারে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হামলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ থাকতে পারেঢাকা: খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা দেয়া উপলক্ষে বিএনপির মিছিলে ছাত্রলীগের হামলার পেছনে প্রধানমন্ত্রীর ইঙ্গিত থাকতে পারে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘গাজীপুর সমাবেশের আগে গতকাল কারা দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাশিমপুর থেকে ফেরার পরেই আওয়ামী লীগ এই আচরণ করছে। তাহলে বলা যেতেই পারে, এতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, বুধবার খালেদা জিয়ার হাজিরাকে কেন্দ্র করে বিএনপি-ছাত্রদলের মিছিলে দুপুর ১২টার দিকে অতর্কিতে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালায়। এছাড়া কাঁদানে গ্যাস ও জলাকামান ব্যবহার করে।

হঠাৎ করেই হামলা চালায় ছাত্রলীগ। ছড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষ। চলে ১২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত। এ সময় বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। আহতরা কোনো দলের নাকি সাধারণ নাগরিক তা এখনও জানা যায়নি। ঘটনাস্থলে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। যদিও বিএনপির নেতাকর্মীরা দাবি করেছেন, পুলিশ ছাত্রলীগের পক্ষ হয়েই কাজ করেছে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডাকা জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঢাকার বকশিবাজারে বিএনপির ওপর ছাত্রলীগের হামলা

কাল নয়, শুক্রবার বিএনপির বিক্ষোভ



মন্তব্য চালু নেই