নিঃস্বার্থভাবে দেশ ও জনগণের সেবা করতে হবে : শেখ হাসিনা

সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করাই হবে আপনাদের জীবনের প্রথম ও প্রধান ব্রত। আপনাদের নিঃস্বার্থভাবে দেশ ও জনগণের সেবা করতে হবে। এ কাজে কখনোই পিছপা হবেন না।’

বুধবার চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (বিএমএ) প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত ৭১তম বিএমএ লংকোর্স এবং ৪২তম বিশেষ কোর্সের রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সশস্ত্র বাহিনীর উপর দুর্বলতা ও গভীর ভালোবাসা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাথে আমার রয়েছে আত্মিক সম্পর্ক। আমার দুই ভাই শহীদ শেখ কামাল ও শেখ জামাল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। সবেচেয়ে ছোট ভাই দশ বছরের শিশু শেখ রাসেলও ভবিষ্যতে সেনাবাহিনীর অফিসার হবে বলে প্রায়ই ইচ্ছা প্রকাশ করতো।’

প্রশিক্ষণ শেষ করা ক্যাডেটদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ সেবার মহান ব্রত নিয়ে আপনারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছেন। একজন প্রতিশ্রুতিশীল সেনা অফিসার হিসাবে আজ আপনাদের আত্মপ্রকাশ ঘটছে। আপনাদের ওপর অর্পিত হবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভবিষ্যৎ নেতৃত্বদানের গুরুদায়িত্ব। সে কাঙ্ক্ষিত নেতৃত্বের জন্য আপনাদের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হয়েছে।’

বিশ্বদরবারে বর্তমানে বাংলাদেশ একটি প্রতিশ্রুতিশীল ও শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। আমাদের ক্রয় ক্ষমতা, মাথাপিছু আয়, রিজার্ভ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তির পাশাপাশি কৃষি, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, গ্রামীণ উন্নয়ন প্রতিটি খাতেই আমরা সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ং-সম্পূর্ণতা অর্জনের করেছি। বিশ্বমন্দা সত্ত্বেও গত ৫ বছরে গড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বর্তমানে ২২.৩৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১২০ ডলার। গত ৫ বছরে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।’

‘বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা প্রায় ১৩ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। নিজস্ব তহবিলে আমরা পদ্মোসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। সারাদেশের প্রতিটি ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা ও জেলার ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার চালু করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ এসব কেন্দ্র থেকে ২০০-এর বেশি বিষয়ে সেবা পাচ্ছেন। সারাদেশে ১২ হাজার ৫৫৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ৩ হাজার ৮৮১টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪ সালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩১ কোটি ৭৮ লাখ ১২ হাজার ৯৬৬টি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি সারাদেশে প্রায় ৩৫ কোটি পুস্তক বিতরণ করা হবে।’

‘উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে দেশের জনগণ আমাদের আবারও নির্বাচিত করেছে। আমরা রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’



মন্তব্য চালু নেই