‘প্যাঁ প্যাঁ’ শব্দ মুছে দিলো ক্লান্তি ॥ রঙে ঢঙে পহেলা বৈশাখ দেখুন

চারদিকে ভুঁ ভুঁ শব্দ। যে যেভাবে পারছে সেভাবেই হাতে বিশেষ ধরণের বাঁশি বাজিয়ে যেন নতুন বছরের আগমনকে স্বাগত জানাচ্ছেন। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবাসহ সকল পেশার ও শ্রেণির মানুষের কোলাহলে মুখরিত রমনার বটমূলসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। কোথাও একটুকু ঠাঁই নেই। চারদিকেই উৎসবে আনন্দে মেতে উঠেছেন ব্যস্ত নগরীর সাধারণ মানুষেরা।
বাংলা বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ। আগের বছরের সকল গ্লানি ও দুঃখ-কষ্ট মুছে সুখ ও শান্তির স্মৃতি নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে বরণ করে নেয়া হচ্ছে বাংলা সন ১৪২২।
বাঙালির চিরায়ত ঐহিত্যের রঙ আর বর্ণিল আয়োজনে সব জীর্নতা আর গ্লানি মুছে নতুনেরে বরণ করে নিতে তাই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বর্ষ বরণের উৎসব।
ভোর থেকেই রাজধানীর রমনার বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ভিড় করেন হাজারো মানুষ। বৈশাখের রঙে পোশাক আর চিরায়ত ঐহিত্যের নানা অনুসঙ্গ হাতে নিয়ে সাধারণ মানুষ যোগ দেন অনুষ্ঠানে।
নতুন বছরকে বরণে শাড়ি, পাজামা, পাঞ্জাবি পরে উৎসবে মুখর ছিল বাঙ্গালী। সকাল সাড়ে নয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার সামনে থেকে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রমনার পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, টিএসসি, শিশুপার্ক, বাংলা একাডেমিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশেও চলছে বর্ষ বরণের নানা আয়োজন।
নানা শ্রেণী পেশার হাজারো মানুষ পরিবার নিয়ে যোগ দিয়েছেন উৎসবে। সারাদেশে নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হচ্ছে পহেলা বৈশাখ।
পরিবার-পরিজন নিয়ে উত্তরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা রফিকুল হক প্রিয়.কমকে বলেন, গরমে ফ্যামিলি নিয়ে একটু কষ্ট হলেও এখানকার উৎসব মুখর পরিবেশ তা বুঝতে দিচ্ছে না। সকলেই খুব উপভোগ করছি বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।
এদিকে বেলা গড়াতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যায় এলাকা পরিপূর্ণ হয়ে যায় উৎসব প্রিয় রাজধানীবাসীর সমাগমে। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়ানো ছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণে সকলই ছিলেন উল্লসিত।
মিরপুর থেকে বন্ধুদের নিয়ে আসা উর্মিলা বলেন, নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আগে থেকেই নানান পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম। তাই বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা, হৈ-হুল্লোর আর বর্ষরণের অনুষ্ঠানগুলো উপভোগ করতে চাই।ইংরেজি নববর্ষে এমন আনন্দ-উৎসব হয় না যতটা না বাংলা নববর্ষে অনুভব করে থাকি। তাই কষ্ট হলেও তা সাময়িক, তা মেনে নিয়েই নতুন বছরকে স্বাগত জানাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নতুন বছরকে বরণে তরুণ-তরুণীদের সাজ-পোশাকে ছিল বাঙ্গালিয়ানা। এই সময় কেউ তো ব্যস্ত আড্ডায়, আবার কেউ তো সেলফি তোলার।
এদিকে বৈশাখের প্রথম দিনে রোদের প্রকোপ বেশি না হলেও ভ্যাপসা গরমের কষ্ট স্বত্বেও নতুন বছরকে বরণে ছিল না ক্লান্তির ছাপ। ভুঁ ভুঁ বাঁশি বাজিয়ে সকল ক্লান্তিকে দূর করে নব উদ্যোমে ১৪২২কে বরণই যেন ছিল আজ বাঙ্গালীর মূল লক্ষ
মন্তব্য চালু নেই