বোমা তৈরির কারখানা থেকে শিবির নেতা আটক
‘পেরেকে গাড়ির চাকা পাংচার, থেমে গেলে আগুন’
রাজধানীর মহাখালী এলাকায় ছাত্রশিবিরের বোমা তৈরীর কারখানায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় শতাধিক হাতবোমা ও বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরীর সরঞ্জামসহ বনানী থানা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানসহ (২৩) পাঁচ নেতাকর্মীকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আটকেরা রাজধানীতে বিভিন্ন নাশকতার সঙ্গে জড়িত ছিল। তারা রাস্তায় প্রথমে পেরেক রেখে গাড়ির চাকা পাংচার করে দিত। এর পর গাড়ি থেমে গেলে পেট্রোল ঢেলে ওই গাড়িতে আগুন দিত।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ভূঁইয়া মাহবুব হাসান জানান, বুধবার ভোরে মহাখালীর টিবি গেটসংলগ্ন আমিনুল ইসলাম ভিলা নামে চ-ব্লকের ১৩৩/১ নম্বর বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটক অন্যরা হলেন- জয়নাল আবেদীন (২১), আরিফুজ্জামান আরিফ (১৮), খালিদ সাইফুল্লাহ (১৯) ও আতিয়ার রহমান (২২)।
ওসি জানান, ওই বাসার দ্বিতীয় তলায় শিবিরকর্মীরা বোমা তৈরীর কারখানা বানিয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে তারা সেখানে বোমা তৈরী করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা সরবরাহ করে আসছিল।
তিনি জানান, শিবিরের ওই বোমা তৈরীর কারখানা থেকে ১৩০টি অবিস্ফোরিত ককটেল, দুই লিটার পেট্রোল, ১০ কেজি পাথরের কুচি, এক কেজি গানপাউডার, ১২টি নতুন কসটেপ, তিন কেজি ধারালো ৪ কোনাবিশিষ্ট পেরেক, তিন কেজি বান্ডেল তুলা, একটি কাঁচি, ১৫টি জর্দার খালি কৌটা, এক কেজি জর্দা, ১২টি বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও বই, ২৭টি খাকি রংয়ের খাম, ছোট-বড় চারটি হিসাবের রেজিষ্টার উদ্ধার করা হয়।
ওসি ভূঁইয়া মাহবুব হাসান বলেন, ‘আটকেরা শুধু বোমা তৈরীই নয়; রাজধানীতে নাশকতা করার পরিকল্পনার ছক তৈরী করেছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নাশকতায় তাদের অভিজ্ঞতা অনেক দিনের। তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে বোমা তৈরী করার পাশাপাশি বোমা নিক্ষেপেও পারদর্শী।’
গাড়ি পোড়ানোর ক্ষেত্রে তাদের অভিনব পদ্ধতি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা প্রথমে রাস্তায় পেরেক ছড়িয়ে দিয়ে চাকা পাংচার করে। পরে গাড়ি থেমে গেলে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।’
পুলিশ জানায়, আটক মোস্তাফিজুর রহমান বনানী থানা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানার চরচৈলাদি এলাকায়।
তার চার সহযোগীর মধ্যে জয়নাল আবেদীন প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলবি (অনার্স) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র্র। তার গ্রামের বাড়ি মেহেরপুর জেলার গাংনী থানার কলোনিপাড়ার বাঁশবাড়িয়া এলাকায়। আরিফুজ্জামান আরিফ ঢাকা পলিটেকনিকে আর্কিটেক্ট বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি মেহেরপুর জেলার হঠাৎপাড়া এলাকায়। খালিদ সাইফুল্লাহ সরকারি তিতুমীর কলেজে (অনার্স) ভর্তির অপেক্ষায়। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার ছোট কামারকুণ্ড এলাকায়। আতিয়ার রহমান সরকারি তিতুমীর কলেজে ইংরেজি (অনার্স) শেষ বর্ষের ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানার দক্ষিণউল্লাহ এলাকায়।
মন্তব্য চালু নেই