আবরোধকারিদের বোমার আগুনে থেমে গেল ট্রাক চালকের সংসার

পেট্রোল বোমায় নিহত কলারোয়ার ট্রাক চালকের দাফন সম্পন্ন, পরিবারে চলছে শোকের মাতম

চাঁদপুরে প্রেট্রল বোমায় নিহত ট্রাক চালক জাহাঙ্গীর আলমকে (২৮) তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার কিছমত ইলিশপুরে দাফন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে তার মরদেহ আনা হলে লাশ দেখে স্বজনেরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এলাকার শত শত মানুষ লাশ দেখতে ভিড় করেন।

এখন তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। সংসারের চাকা ঘুরানো পরিবারের আয়ক্ষম ব্যক্তিটিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তার স্বজনরা। তাদেরকে শান্তনা দেয়ার ভাষাও যেন হারিয়ে ফেলেছে এলকাবাসি। সন্তানের মৃত্যু খবরে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন ট্রাক চালক জাহাঙ্গীরের মা সাজেদা বেগম। স্বামীর অকাল মৃত্যুতে স্ত্রী খাদিজা খাতুনও দুই শিশু সন্তান নিয়ে প্রাগলপ্রায়। গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলা কিছমত ইলিশপুর গ্রামের সুরোত আলী মোড়লের ছেলে ট্রাক চালক জাহাঙ্গীরের বাড়িতে যেয়ে এদৃশ্য দেখা যায়।

নিহত জাহাঙ্গীরের ভাই সেলিম হোসেন জানান, গত সোমবার বিকালে যশোরের শার্শা উপজেলার সাত মাইল গরুর হাট থেকে গরু ভর্তি ট্রাক নিয়ে সে চট্টগ্রাম যায়। সেখান থেকে সে ট্রাকে টমেটো বোঝাই করে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বুধবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে চাঁদপুর সদরের চৌরাস্তা মোড়ে পৌছালে দুর্বৃত্তদের ছুড়ে মারা পেট্রোল বোমায় সে দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এসময় আহত হয় যশোরের বাগআঁচড়া এলাকার আরো তিন জন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

নিহত জাহাঙ্গীরের মা সাদেজা বেগম ছেলের শোকে বুকফাটা আহাজারি করতে করতে বলেন, হরতাল অবরোধ ডাকা সন্ত্রাসীরাই বোমা মেরে আমার বুকের ধনকে কেড়ে নিয়েছে। এখন আমার এই সংসার কে চালাবে। আমি প্রধান মন্ত্রীর কাছে এ হত্যার বিচার চাই। তাদের মাত্র আড়াই কাঠা জমির উপর মাটির ঘরবড়ি বেধে বসবাস। জাহাঙ্গীরের আয়ে রোজগার দিয়েই সংসারের ১০ জনের মুখে খাবার উঠতো। এখন কে নেবে এ সংসারের ভার। এসব কথা বলতে বলতে তিনি সঙ্গাহীন হয়ে পড়েন।

এসময় পাশে পাগলের মতো বিলাপ করছিলো জাহাঙ্গীরের স্ত্রী খাদিজা খাতুন। স্বামী হারানোর শোকে পাথর হয়ে যাওয়া দুই সন্তানের এ জননীর গগনবিদারি বিলাপে এলাকার বাতাস আরো ভারী হয়ে ওঠে। তিনি জানান, তার শিশু পুত্র জাহিদ হাসান (৬) ও শাহিদ হাসান (২) কে নিয়ে তার স্বামীর অনেক স্বপ্ন ছিলো। স্বামীর সে স্বপ্ন আর পুরোন হলোনা।

জাহাঙ্গীরের পিতা সুরোত আলী মোড়ল জানান, তিনি বাঁগআচড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিক নেতা তবিবর রহমানের।

স্থানীয় কেরালকাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নোত স.ম মোর্শেদ আলী বলেন, গতকাল জুম্মার নামাজের আগে নিহত ট্রাক চালকের জানাজা নামাজ শেষে তাকে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। জানাজায় এলকার শত শত বাস ট্রাক শ্রমিক ও এলাকাবাসি অংশ গ্রহন করেন।



মন্তব্য চালু নেই