পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ পেট্রোলবোমা ও আগুন দিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যায় জড়িতদের গণতন্ত্র, মানবতা ও সভ্যতার শত্রু হিসেবে উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আহ্বান জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, যানবাহনে পেট্রোলবোমা ছুড়ে ও আগুন দিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা করায় দেশবাসীর সঙ্গে তিনিও গভীরভাবে মর্মাহত। তিনি বলেন, যারা এ ধরনের জঘন্য কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তারা গণতন্ত্র, মানবতা ও সভ্যতার শত্রু। তিনি এ সকল দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি নির্দেশ দেন।

রাষ্ট্রপতি বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে পুলিশ সপ্তাহ-২০১৫ পালনের অংশ হিসেবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ সব কথা বলেন।

তিনি সাম্প্রতিক সময়ে পেট্রোলবোমা ও অন্যান্য সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং তাদের শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
রাষ্ট্রপতি মানুষ হত্যাকারী সন্ত্রাসীদের আটক করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের লোক গণতন্ত্র ভালবাসে ও তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে দলমতের ভিন্নতা থাকাটাই স্বাভাবিক। গণতন্ত্রের সৌন্দর্যই এখানে। গণতন্ত্র চর্চার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহিষ্ণুতা দেখানোর রীতি চর্চা করতে হবে।

আবদুল হামিদ বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য একটি আধুনিক ও জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী প্রয়োজন। জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানে পুলিশ সদস্যদের সক্রিয় থাকতে হবে। তিনি বলেন, অপরাধীদের দমন ও আইনের কাছে সোপর্দ করা এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের যথাযথ তদন্তে তাদের সক্রিয় থাকতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের তাদের সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার মাধ্যমে ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশ ও জনগণের স্বার্থ রক্ষায় দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন নিয়ে যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে, সেদিকে আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে।

আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ ইতোমধ্যেই জনবান্ধব হিসেবে জনগণের আস্থা অর্জন করেছে এবং ভবিষ্যতেও তারা তাদের এ ধরনের দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপতি জঙ্গী দমনে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের এই ভূমিকা দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষায় এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তাদের দায়িত্ব পালন আগামীতে অব্যাহত রাখবে বলেও রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে একটি আধুনিক ও প্রযুক্তিভিত্তিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, সরকার ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালে ৭৩৯টি ক্যাডারসহ ৩২ হাজার নতুন পদ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি শিল্প পুলিশ, বিশেষ নিরাপত্তা ও প্রটেকশন ব্যাটালিয়ন, তদন্ত ব্যুরো, পর্যটন পুলিশ ও নৌ-পুলিশের মতো কয়েকটি বিশেষ ইউনিট গঠন করেছে।
রাষ্ট্রপতি ২০১৩-১৪ সালে দায়িত্ব পালনকালে নিহত পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের আইজি শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন। (সূত্র : বাসস)



মন্তব্য চালু নেই