পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু চুক্তি বাতিল করলো না ভারত!
পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জলচুক্তি বাতিলের চিন্তাভাবনা থেকে ভারত সরে এসেছে। আর এই সরে আসার পেছনের একটা কারণ ছিল ‘বাংলাদেশের স্বার্থ’। নয়াদিল্লি মনে করে, পানি নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গেও ভারতের চুক্তি আছে। এ অবস্থায় সিন্ধু চুক্তি বাতিল হলে ঢাকা-নয়াদিল্লির চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের মধ্যেও শঙ্কা তৈরি হতে পারে।
মোট ছয়টি নদীর পানিবণ্টন নিয়ে ১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু জলচুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু বেসিনের তিনটি নদী সিন্ধু, ঝিলম ও চেনাবের অধিকাংশ পানি পাকিস্তান পেয়ে থাকে। আর রাভি, বিপাশা ও শতদ্রুর পানির বেশির ভাগ পায় ভারত।
এ অবস্থায় ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরিতে জঙ্গী হামলার পর ওই চুক্তি বাতিলের কথা ওঠে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ দু’দিন আগেই ঘোষণা দেন, ‘এ ধরনের চুক্তি কার্যকর থাকতে হলে দুই পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতা থাকতে হবে। চুক্তির প্রস্তাবনাতেও সে কথা বলা আছে।’
চুক্তি বাতিলের এ রকম একটা আশংকা নিয়েই সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বৈঠকে বসেন ভারতের কর্মকর্তারা। সেখানে পররাষ্ট্রসচিব এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘যদিও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের নেওয়া যেকোনও পদক্ষেপকে বাংলাদেশ সমর্থন দেবে বলে আগাম ঘোষণা দিয়েছে, তারপরও সিন্ধু চুক্তি থেকে সরে এলে সেটা বাংলাদেশের জন্য বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠবে।’ পানিবণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গেও ভারতের চুক্তি আছে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এমন প্রশ্ন উঠতেই পারে, কোনও কারণে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হলে নয়াদিল্লি কি গঙ্গা চুক্তি থেকে মাঝপথে সরে আসতে পারে?
এ ছাড়া সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল হলে পাকিস্তানের মিত্র চীন ব্রহ্মপুত্রের পানি আটকে রাখতে পারে, এমন আশঙ্কাও সিন্ধু চুক্তি বাতিলের চিন্তাভাবনায় প্রভাব ফেলেছে। যদিও ব্রহ্মপুত্র নিয়ে ভারতের সঙ্গে চীনের কোনও চুক্তি নেই।
তবে সিন্ধু চুক্তি থেকে সরে না এলেও সোমবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সিন্ধু, ঝিলম ও চেনাব নদীর পানি কিভাবে ভারত আরও বেশি ব্যবহার করতে পারে, তা খতিয়ে দেখা হবে।
মন্তব্য চালু নেই