পপুলার হাসপাতালের টয়লেটে নারীর ভিডিও ধারণ, কর্মী আটক

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রস্রাব পরীক্ষা করতে টয়লেটে গিয়েছিলেন একজন নারী রোগী। কিন্তু প্রস্রাব দেয়ার সময় তিনি, লক্ষ্য করেন নীচ থেকে কেউ একজন তাকে ভিডিও করছে। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি মোবাইল ফোনটা ধরে ফেলেন। বেশ কিছু সময় টানাটানি করলেও ফোনটি নিতে না পেরে টয়লেট থেকে বের হয়ে ভিডিও ধারণকারীকে ধরে ফেলেন। পরে ধানমন্ডি থানায় ফোন করলে পুলিশ এসে অভিযুক্ত আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে এমনটা ঘটনা ঘটেছে শনিবার সকালে। অভিযুক্ত হাসিবুর রহমান ওই হাসপাতালের টেলিফোন অপারেটর। এদিকে এই সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বেসরকারি সময় টেলিভিশনের প্রতিবেদক আহমেদ সালেহীন ও ভিডিও সাংবাদিক শফিকুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেছেন,‘পপুলালের স্টাফ থানায় আছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা মামলা হিসেবে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।’

দুপুরের পর পপুলারের ওই কর্মীর বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,সকালে ভুক্তভোগী ওই নারী পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করার করার জন্য বলেন। এরপর ওই নারী প্যাথলজি বিভাগ থেকে দেওয়া টিউব নিয়ে হাসপাতালের টয়লেটে যান। এ সময় তিনি খেয়াল করেন কেউ একজন বোর্ড দিয়ে তৈরি টয়লেটের দেয়ালের নীচ থেকে মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও ধারণ করছেন।

পরে জানা যায় ওই ব্যক্তির নাম হাসিবুর রহমান। সে ওই হাসপাতালের টেলিফোন অপারেটর।

খবর পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে পপুলারের চতুর্থ তলায় সময় টেলিভিশনের একজন প্রতিবেদক হাসপাতালের কাস্টমার সার্ভিসের মহাব্যবস্থাপক মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেন। তিনি ঘটনার কথা করে স্বীকার বলেন, ‘হাসিবুর বিকৃত মস্তিষ্কের লোক। আমরা ওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।’

দুই সংবাদিক জানান, পরে তিনি সংবাদ প্রচার না করতে নানা ধরণের প্রলোভন দেন। কিন্তু প্রতিবেদক রাজি না হওয়ায় ওই প্রতিবেদক ও ভিডিওগ্রাফারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন মোসাদ্দেক। পরে তার সঙ্গে যোগ দেন আরো কয়েকজন চিকিৎসক। এক পর্যায়ে তারা ভিডিও নষ্ট করতে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ক্যামেরা না দেয়ায় তারা ভিডিওগ্রাফারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। পরে তাকে টেনে পাশের কক্ষে নিয়ে গিয়ে ক্যামেরার ব্যাটারি খুলে ফেলেন হাসপাতালের কর্মীরা।

শুধু তাই নয়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের আটক করার জন্য ধানমন্ডি থানায় ফোন দেয়। পরে উপপরিদর্শক রফিক তার পেট্রোল দল নিয়ে হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি বুঝতে পেরে ক্যামেরার ব্যাটারি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যাটারি ফেরত দেয়।

অভিযুক্ত কর্মীকে কেন পপুলার বাঁচাতে চাইছে- সে বিষয়ে বারবার চেষ্টা করেও পপুলারের কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া মোবাইল ফোন ও টেলিফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি।



মন্তব্য চালু নেই