পথে পথে পয়লা বৈশাখের আমেজ

পয়লা বৈশাখ বাঙালির জীবনে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী দিন। রাজধানীর পথে পথে বইছে বর্ষবরণের আমেজ। শুধু টিএসসি মোড়, শাহবাগ বা রমনায় নয়, বৈশাখ যেন সব খানে।

রাস্তার পাশে বিক্রেতারা বাংলার ঐতিহ্যবাহী জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। মানুষ ঘুরছে এবং নানা জিনিস কিনছে। কাগজের টুপি, কাচের চুড়ি, শোলার পাখি, মাটির গহনা, খেলনা, আসবাবপত্র, নলখাড়ার বাঁশি, ঢোল-ডুগডুগি, একতারা থেকে শুরু করে রান্নাঘরের জন্য বঁটি-খুন্তিসহ বিভিন্ন পণ্যের বিক্রি বেশ ভাল।

ব্যবসায়ীরা জানান, বৈশাখ উপলক্ষে প্রায় ২ মাস আগে থেকে তারা প্রস্তুতি নেন। তৈরি করেন গ্রাম বাংলার বিভিন্ন জিনিসপত্র। সারা বছরের আয়ের বড় একটা অংশ আসে এই বৈশাখকে ঘিরে। পহেলা বৈশাখের মাস খানেক আগে এসব পণ্য নিয়ে রাজধানীতে চলে আসেন তারা।

লক্ষীপুর থেকে এসেছেন বাচ্চু মিয়া। তিনি রমনায় ফুটপাতে প্লাস্টিকের চরকি, ঢোলসহ বিভিন্ন ধরনের খেলা বিক্রি করছেন। তিনি জানান, মহাজনের কাছ থেকে বাকীতে মাল কিনে এক মাস আগে ঢাকায় এসেছেন এসব পণ্য বিক্রি করতে।

বিক্রি কেমন হচ্ছে- এ প্রশ্নের উত্তরে বাচ্চু মিয়া এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বৈশাখকে ঘিরে আমাদের ব্যবসা। এর মধ্যে বৈশাখের পয়লা দিনে বিক্রি বেশি হয়। এ সময়ে মোটামুটি আয় হয়।

টিএসসি এলাকায় কাঠের চুড়ি, মালা নিয়ে বসেছেন ফরিদপুরের বিক্রেতা রাজীব। তিনি জানান, প্রতিটি আইটেম ২০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তিনি জানান, গ্রামের বাড়ির লোকজন সারা বছরই এই কুটির শিল্পের কাজ করেন। তিনি নিজেও এসব তৈরি করেন। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ২ মাস আগ এসব তৈরির প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেন। এসব পণ্য নিয়ে মাস খানেক আগে তাদের পরিবারের কয়েকজন সদস্য ঢাকায় এসেছেন। প্রত্যেকেই ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় এসব পণ্য বিক্রি করছেন।

বাঁশের চালুন, ডালা, কুলাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে বসেছেন নার্গিস আক্তার। তিনি বলেন, কুষ্টিয়ার গ্রামের বাড়িতে নিজে ও কারিগরদের দ্বারা তৈরি করেছেন এসব বাঁশের সামগ্রী। প্রতি পিস বাঁশের চালুন-কুলার দাম ৫০ থেকে ১০০ টাকা।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মাটির তৈরি ডুগডুগি বিক্রি করছেন গাইবান্ধার ষাটঊর্ধ বয়সের মোজাম্মেল হোসেন। তিনি জানান, নিজ বাড়িতে তৈরি করা ৬০০ ডুগডুগি নিয়ে কয়েক দিন আগেই ঢাকায় এসেছেন। প্রতিটি ডুগডগি ১০-২০ টাকায় বিক্রি করছেন।

চারুকলার সামনে কাঁচের চুড়ি কিনছেন মোহাম্মদপুর থেকে আসা শিক্ষার্থী ফারিন উর্মি। কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, ‘ঘুরাঘুরি করতে ছোট ভাই শাওনকে নিয়ে চারুকলায় এসেছেন। অনেক মজা হয়েছে। ঘোরাঘুরি করতে করতে এক সেট চুড়ি পছন্দ হল তাই কিনলাম।’



মন্তব্য চালু নেই