নৌ-দুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ জানতে চায় কমিটি

দেশের নৌ-পথে বার বার লঞ্চ দুর্ঘটনার কারণ এবং তার প্রতিকার সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও প্রস্তাব নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চেয়ে মন্ত্রণালয়টির সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য প্রতিবেদন আকারে আগামী ১২ মার্চের মধ্যে কমিটির কাছে উপস্থাপনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদ ভবনে বৃহস্পতিবার দুপুরে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১১তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সম্প্রতি দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে পদ্মা নদীতে লঞ্চ দুর্ঘটনায় উদ্বেগ জানানোর পাশাপাশি অন্যান্য নৌ-দুর্ঘটনা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

বৈঠক প্রসঙ্গে কমিটির সভাপতি সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘দেশের নৌ-পথে বার বার দুর্ঘটনা ঘটছে। আর এ সব দুর্ঘটনার পর কমিটি করে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে কোনো ফল আসছে না। আমরা আজ (বৃহস্পতিবার) মন্ত্রীকে বলেছি এভাবে নৌ দুর্ঘটনা ঘটবে আর আপনারা শুধু শোক আর দুঃখ প্রকাশ করবেন তা হবে না। কীভাবে নৌ দুর্ঘটনা বন্ধ করা যায় সে ব্যাপারে চিন্তা করুন।’

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মন্ত্রণালয়কে বলেছি সড়কে যানচলাচলে শৃঙ্খলা রাখতে ট্রাফিক ব্যবস্থা আছে। বিমানের জন্য এয়ার ট্রাফিকিং হয়। নৌ পরিবহনের জন্য এমন কিছু চিন্তা করুন যাতে এভাবে আর দুর্ঘটনা না ঘটে, এতো মানুষের প্রাণহানী যেন আর না হয়।’

কমিটির সভাপতি বলেন, ‘আমরা বলেছি যদি মন্ত্রণালয়ে জনবল প্রয়োজন হয়, সরকার তা দেবে। যদি প্রযুক্তিগত কোনো সহায়তা দরকার হয় তাও দেওয়া হবে।’

রফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের নৌ-পথে যে সব যান চলাচল করছে তার অধিকাংশরই ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। এ সব জাহাজ কোনো ইঞ্জিনিয়ারের নকশায় তৈরি হয় না। যে যেভাবে পারছে নকশাবিহীন নৌযান তৈরি করে চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবে তো হতে পারে না। প্রয়োজনে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে।’

কমিটি সদস্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রী মো. শাজাহান খান, সংসদ সদস্য মো. আব্দুল হাই, মো. হাবিবর রহমান, এম আব্দুল লতিফ এবং মো. আনোরুল আজীম (আনার) বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি), বাংলাদেশ স্থলবন্দর এবং গভীর সমুদ্রবন্দর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

এ ছাড়া আরিচায় ল্যান্ড বেইজড ওয়ার্কশপ স্থাপন এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে দেশের নৌ-পরিবহন সচল রাখতে জরুরি জ্বালানি সরবরাহ করার নিমিত্তে কমপক্ষে ২টি অয়েল ট্যাংকার রিজার্ভ রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।

বৈঠক সুত্রে জানা যায়, খাগড়াছড়ির রামগড়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থলবন্দর চালু করার এবং উত্তর ও দক্ষিণে যে সকল স্থলবন্দর আছে সে সকল স্থলবন্দরের নাম, বর্তমান অবস্থা, সমস্যা, এ বিষয়ে কী কী করণীয় তার একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিটির পরবর্তী বৈঠকে প্রদানের জন্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়।

বৈঠকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ দুর্ঘটনায় মৃতদের মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই