নৃশংস গণধর্ষণ, নতুন আইনের দাবি জোরালো মালয়েশিয়ায়
দিলীপ মজুমদার (কলকাতা): পাকিস্তান, ভারতের পর মালয়েশিয়া। নৃশংস নারী নির্যাতনের ঘটনার জেরে এই তিন দেশই তোলপাড়। বিশেষত মালয়েশিয়ায় সাম্প্রতিক গণধর্ষণ নাড়া দিয়েছে তামাম বিশ্বকে। সেখানে ৩৮ জন মিলে ১৫ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার জেরে আরও কড়া আইন প্রণয়নের দাবি উঠেছে সে দেশে।
ঠিক কী হয়েছিল মালয়েশিয়ায়? পুলিশ সূত্রে খবর, ২০ মে কেলান্টান প্রদেশের কোনও এক গ্রামে ধর্ষিতা হয় ওই কিশোরী। সেখানে এক বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল সে। তার পর তাকে লোভ দেখিয়ে একটি বাড়িতে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। সেখানেই চলে অত্যাচার। পালা করে ৩৮ জন ধর্ষণ করে ওই তরুণীকে। মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বান্ধবীকেও ধর্ষণ করা হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই মাদকাসক্ত। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় অত্যাচার চালিয়েছে তারা। কিন্তু মূল প্রশ্ন অন্যত্র। তা হল যে গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে, সে গ্রামের বাসিন্দারা ওই নেশাখোরদের কথা পুলিশকে আগে জানাননি কেন? সে ক্ষেত্রে হয়তো এমন বীভৎস অত্যাচার সহ্যই করতে হত না ওই কিশোরীকে।
তথ্য অবশ্য বলছে, মালয়েশিয়ায় ধর্ষণ কোনও নজিরবিহীন ঘটনা নয়। ২০১২ সালেই মালয়েশিয়ায় প্রায় ৩০০০ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। যার মধ্যে ৫২ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে ধর্ষিতার বয়স ছিল ১৬ বছর কিংবা তার কম। শুধু মালয়েশিয়া কেন? হালে ভারতেও তিন জায়গায় চারটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে উত্তরপ্রদেশে বদায়ূঁতে দুই বোনকে ধর্ষণ করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ফের উত্তাল ভারত। প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুক, টুইটারে। পাশাপাশি উঠে এসেছে পাকিস্তানের অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে নৃশংস ভাবে খুন করার ঘটনাও। সব মিলিয়ে নারী নির্যাতনের ঘটনা যেন মিলিয়ে দিয়েছে এই তিন দেশকে।
মালয়েশিয়ার বাসিন্দাদের একটা অংশ অবশ্য এই অত্যাচার রুখতে আরও কড়া আইন ও শাস্তি আনার পক্ষে সওয়াল করছেন। বর্তমান আইনে ধর্ষণের অপরাধ প্রমাণিত হলে মালয়েশিয়ায় ৩০ বছর পর্যন্ত কারাবাস এবং বেত্রাঘাতের শাস্তি হয়। কিন্তু এই শাস্তি যে অত্যাচারের ঘটনা বা তার বীভৎসতা কোনওটাই কমাতে পারছে না, তা এই সাম্প্রতিক ঘটনার পর স্পষ্ট। তাই আইন পরিবর্তনের পক্ষে শুরু হয়েছে সওয়াল।
উল্লেখ্য নির্ভয়া-কাণ্ডের পর ভারতও ধর্ষণ সংক্রান্ত আইনে বদল এনেছিল। কিন্তু তাতে লাভ হল কি?
উত্তরটা উত্তরপ্রদেশের তিনটি ঘটনা থেকেই আন্দাজ করা যায়। এ সব জেনে মালয়েশিয়া-প্রশাসন কী করে, সেটাই দেখার।
মন্তব্য চালু নেই