নির্বাচনের আগেই ফিলিপিন্সে ৭ কোটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট বেহাত
নির্বাচনের মাত্র এক মাস আগে ফিলিপিন্সে ঘটে গেল ইতিহাসের এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় সরকারি তথ্য ফাঁসের ঘটনা। প্রায় সাত কোটি মানুষের হাতের ছাপ ও পাসপোর্টের তথ্যের মতো ব্যক্তিগত তথ্য ওই হ্যাকিংয়ে চুরি করা হয়েছে।
ফিলিপিন্সে প্রতি ছয় বছর পরপর সাধারণ নির্বাচন হয় এবং আসন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটি নতুন প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ১৮ হাজরেরও বেশি কর্মকর্তা বাছাই করবে।
দ্যা ফিলিপিন্স কমিশন অন দ্যা ইলেকশনস (সংক্ষেপে কমইলেক)-এর তথ্যানুসারে তাদের ওয়েবসাইটটি মার্চ মাসের শেষ দিকে হ্যাক করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি। ফিলিপিন্সের অজ্ঞাত এক হ্যকার দল ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। দলটির দাবি, তারা ৯ মে’র নির্বাচনে যে স্বয়ংক্রিয় ভোটিং মেশিনগুলো ব্যবহৃত হবে সেগুলোসহ ভোট গ্রহণ ব্যবস্থাটির দুর্বলতাগুলো তুলে ধরতে চেয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এ ঘটনার কিছুদিন পর ‘লুলজসেক ফিলিপিন্স’ নামে অপর এক হ্যাকার দল কমইলেক-এর সম্পূর্ণ ডাটাবেজ অনলাইনে পোস্ট করে দিয়েছিল। কমইলেক জানিয়েছে, বিভিন্ন রিপোর্ট অনুসারে সংবেদনশীল কোনো তথ্য ফাঁস হয়নি।
এদিকে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ‘ট্রেন্ড মাইক্রো’র মতে সরকারী তথ্য ফাঁসের ক্ষেত্রে এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘটনা, যেটি সরকার সমাধানের চেষ্টা করছে। প্রতিষ্ঠানটি এক প্রতিবেদনে বলেছে, “ফিলিপিন্সে প্রত্যেক নিবন্ধনকৃত ভোটারই এখন পরিচয় জালিয়াতিসহ বিভিন্ন ঝুঁকির আশঙ্কায় রয়েছে।”
ট্রেন্ড মাইক্রো’র মতে, এটি ২০১৫ সালের যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউএস অফিস অফ পারসোনেল ম্যানেজমেন্টের’ হ্যাকিংয়ের ঘটনার চেয়েও বড়। ওই হ্যাকিংয়ে দুই কোটি মার্কিন নাগরিকের আঙ্গুলের ছাপ এবং ‘সোশাল সিকিউরিটি নাম্বার’ হ্যাক করা হয়েছিল; যদিও এখন পর্যন্ত তথ্যগুলো অনলাইনে পাওয়া যায়নি। পানামার আইন ফার্ম মোস্যাক ফনসেকা’র মতে সেখানে ১১ কোটির বেশি ডকুমেন্ট ফাঁস হয়েছে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। এ ছাড়াও ডিপার্টমেন্ট স্টোর ‘টার্গেট’ এবং ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ‘সনি’-তেও সম্প্রতি এমন তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে।
স্বাস্থ্যসেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোই তথ্য ফাঁসের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানিয়েছে ট্রেন্ড মাইক্রো।
ট্রেন্ড মাইক্রোর ম্যানেজার রায়ান ফ্লোরেস মনে করেন, এমন ঘটনা আরও ঘটবে বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। তাই এটি প্রতিহত করতে “শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা” প্রয়োজন। এ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে একটি দল থাকবে যারা খুব সংবেদনশীল তথ্যগুলো এবং ট্র্যাক করা যেতে পারে এমন সফটওয়্যার ইনস্টল করার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
ফ্লোরেস আরও বলেছেন, “ফিলিপিন্সের মতো দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে উন্নত করার জন্য সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান বা নেই”
“অসৎ উদ্দেশ্য আছে এমন যে কেউ এর মাধ্যমে ভোটের ফল পাল্টে দিতে পারে।”
মন্তব্য চালু নেই