জুমার নামাজে বোমা হামলা : নিহত অসংখ্য
নাইজেরিয়ার কানো শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদে আত্মঘাতী বোমাহামলা ও গুলি বর্ষণে অসংখ্য নিহত হয়েছে। তবে নাইজেরিয়ার একটি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে এই আত্মঘাতী বোমাহামলায় অনন্ত ১২০ জন নিহত হয়েছে। আর আহত হয়েছে আরো ২৭০জন। এর মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্ক্ষাজনক। শুক্রবার জুমার নামাজ চলাকালে দুই আত্মঘাতী হামলাকারী বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। বিস্ফোরণের পাশাপাশি বন্দুকধারীরা গুলিবর্ষণ করে।
দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় কানো শহরের গ্যান্ড মসজিদে এ হামলা চালানো হয়। শহরের মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় মসজিদ। নামাজ শুরু হওয়া পরপরই এই হামলা চলে।
মসজিদটি কানোর আমির মুহাম্মদ সানুসির বাড়ির কাছাকাছি অবস্থিত। সাধারণত শহরের প্রভাবশালী মুসলিম নেতারা সেখানে নামাজ পড়েন। তবে সানুসি বর্তমানে সৌদি আরবে আছেন।
খবরে বলা হয়েছে, মুহাম্মদ সানুসি দেশটির দ্বিতীয় শীর্ষ ধর্মীয় নেতা। চলতি বছরের শুরুর দিকেও নাইজেরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দেশটির রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে সাধারণত তিনি কথা বলেন না।
তবে গত সপ্তাহে তিনি জঙ্গি সংগঠন বোকো হারামের বিরুদ্ধে শহরবাসীকে অস্ত্র তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, তার ওই আহ্বান ছিল উস্কানিমূলক।
শুক্রবার মাইদুগুরি শহরে আরেকটি বোমা হামলার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেয় পুলিশ। এর দিনপাঁচেক আগে শহরটিতে দুই নারী বোমারুর আত্মঘাতী হামলায় ৪৫ ব্যক্তি প্রাণ হারান।
দেশটির পুলিশের মুখপাত্র ইমানুয়েল ওজুকো এএফপিকে জানান, নামাজ শুরু হলে আত্মঘাতীরা দ্রুত বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় লোকজন ছুটাছুটি শুরু করলে বন্দুকধারীরা তাদের ওপর গুলি বর্ষণ করে। ফলে হতাহতের ঘটনা বেড়ে যায়।
তরে আত্মঘাতী হামলাকারী নারী না পুরুষ তা নিশ্চিত করতে পারেননি ওজুকো। সম্প্রতি দেশটিতে নারী হামলাকারীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। আর বন্দুকধারীদের সংখ্যাও তিনি জানাতে পারেননি। তবে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতা গুলিবর্ষণকারীদের চারজনকে পরে হত্যা করে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তিনি প্রায় ৫০ জনের মরদেহ দেখেছেন।
এএফপির নাইজেরীয় সংবাদদাতা মুরতালা মোহাম্মেদ বিশেষায়িত হাসপাতালের মর্গে ৯২টি মৃতদেহ দেখতে পেয়েছেন। এদের বেশিরভাগ পুরুষ ও বালক। অনেকের দেহ ঝলসে গেছে। রাতের অন্ধকারে অনেকেই টর্চলাইট অথবা মোবাইলের আলোয় স্বজনদের লাশ খুঁজে ফিরেছেন।
পরে সরকারের একজন সিনিয়র কর্মকর্থা বলেন, বোমা হামলা ও গুলি বর্ষণে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৭০ জন।
মানবাধিকার সংগঠনের হিসাবে শুধু চলতি বছরেই নাইজেরিয়ায় বোকো হারামের হামলায় ২ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
বোকো হারাম নাইজেরিয়ার একটি জঙ্গি সংগঠন। উগ্র এই সংগঠনটির দাবি, পশ্চিমা সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো রাজনৈতিক বা সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া মুসলিমদের জন্য হারাম। এই সংগঠনটির আসল নাম জামা’য়াতু আহলিস সুন্না লিদ্দা’আওয়াতি ওয়াল-জিহাদ।
পশ্চিমাবিরোধী তীব্র কর্মকাণ্ডের জন্য পরে এটি বোকো হারাম নামে পরিচিতি পায়। ২০১৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বোকো হারামকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দেয়।
নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
মন্তব্য চালু নেই