ধর্ষণের আসামি প্রকাশ্যে, পুলিশ বলছে পলাতক
ঢাকার আশুলিয়ায় ষষ্ঠশ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলার আসামি এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ধর্ষণের এক মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ মূল আসামিকে ধরছে না বলে অভিযোগ বাদীর। তবে পুলিশ বলছে আসামিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
ওই ছাত্রীর মা দাবি করেছেন, মামলা তুলে নিতে আসামির পরিবার থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১০ জুলাই দুসম্পর্কের মামাতো ভাই সোহেলের সাথে আশুলিয়ার জনতা হাউজিং এলাকায় বেড়াতে যায় ওই ছাত্রী। এ সময় স্থানীয় প্রভাবশালী মো. হরমুজের বখাটে ছেলে সোহাগ ও তার কয়েক বন্ধু মিলে তাদের জনতা হাউজিংয়ের একটি বাসায় নিয়ে যায় এবং সোহেলকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। পরে তারা পালাক্রমে ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে।
ধর্ষণ শেষে সোহাগ ও তার বন্ধুরা ওই স্কুলছাত্রীকে তাদের ভাড়া বাসার সামনে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে উদ্ধার ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় স্বজনরা। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পেয়ে বিষয়টি আশুলিয়া থানা পুলিশকে অবগত করেন। পরে পুলিশ ওই ছাত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠায়।
এদিকে, এই ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা হরমুজের ছেলে সোহাগ ও তার কয়েক বন্ধুর নাম উল্লেখ আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। মামলার এক মাসের মাথায় শিমুল নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে মূল আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
অভিযোগ রয়েছে সোহাগ ও তার বন্ধুরা অনেকটা প্রকাশ্যেই চলাফেরা করেন এলাকায়।
মামলার বাদী মরিয়ম বেগমের দাবি সোহাগের বাবা হরমুজ মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত তাকে চাপ দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, মামলা তুলে না নিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
তাই অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে ওই ছাত্রীর মা বলেন, আমি গরিব বলে কি আমার কোনো মূল্য নাই? আমার কোনো দাম নাই? গরিবের ইজ্জতের কি কোনো দাম নাই?ৎ
এ সময় তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে কারো কাছ থেকে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাচ্ছেন না, উল্টো তিনি পাচ্ছেন অপমান ও লাঞ্ছনা।
হুমকির বিষয়ে আসামির বাবা মো. হরমুজ বলেন, ‘ডিস ব্যবসা করি। মামলার বাদী যে বাসায় ভাড়া থাকেন সেই বাসার মালিকও ডিস ব্যবসা করে। এই কারণে ব্যবসার সুনাম নষ্ট করার জন্য মামলা দিয়েছে।’
বাদীকে হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কেউ অন্যায় করলে ছাড় দেব নাকি? আমি কোনো অন্যায় করি না, কারো অন্যায় সহ্যও করি না।’
ধর্ষণ মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মতিউর রহমানকে।
তিনি বলেন, ‘আমি বাদীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে। বাদীকে বলেছি, আসামি কোথায় আছে জানালে পুলিশ গিয়ে ধরবে। আমি তো আসামিকে চিনি না, বাদী চিনিয়ে দিলে ধরতে সুবিধা হবে।’
আসামি ধরার বিষয়ে কোনো গাফিলতি নেই। খুব শিগগিরই আসামি ধরা পড়বে— যোগ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মন্তব্য চালু নেই