‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর লাখো জার্মান নারীকে ধর্ষণ’

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তির হাতে জার্মানি নেতৃত্বাধীন অক্ষশক্তির পরাজয়ের পর হিটলারের দেশটিতে প্রবেশ করে অক্ষশক্তিভুক্ত দেশগুলোর সৈন্যরা। এ সময় তাদের হাতে লাখ লাখ জার্মান নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বলে সম্প্রতি একটি বইয়ে দাবি করা হয়েছে। খবর ডেইলিমেইলের।

‘হোয়েন দ্য সোলজার্স কেইম’ নামক বইয়ে জার্মান ইতিহাসবিদ মারিয়াম গেবহার্ডট দাবি করেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মিত্রশক্তিভুক্ত দেশগুলোর সৈন্য ও তাদের সাহায্যকারীরা অন্তত আট লাখ ৬০ হাজার নারী ও শিশুকে ধর্ষণ করে। জার্মান পুরুষরাও সৈন্যদের ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতদিন ধারণা করা হতো, রেড আর্মি নামে পরিচিত সোভিয়েত ইউনিয়নের সৈন্যরা জার্মানিতে ব্যাপক নারী নির্যাতন চালিয়েছিল। তৎকালীন সোভিয়েত একনায়ক জোসেফ স্ট্যালিন ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে গণ্য করতেন।

তবে এ বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, শুধু সোভিয়েত সৈন্যরাই নয়, ধর্ষণযজ্ঞে পিছিয়ে ছিল না ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরাও।

সৈন্যদের যৌন লালসার শিকার হয়ে অনেক নারী আত্মহত্যা করেছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বই লেখার আগে বেশ কয়েকজন নির্যাতিতের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জার্মান ইতিহাসবিদ গেবহার্ডট। তিনি বলেন, ‘আমি এই বই লেখার জন্য দেড় বছর ধরে গবেষণা চালিয়েছি। আমি নির্যাতিতদের দৃষ্টিকোণ থেকে ঘটনা বর্ণনা করতে চাই।’

তিনি বলেন, শুধু সোভিয়েত নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলেই এ ধরনের ‘জঘন্য অপরাধ’ সংগঠিত হয়নি ফ্রেঞ্চ, ব্রিটিশ ও আমেরিকান অঞ্চলেও একই ধরনের অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। ওই সময়ে একটি ‘জনপ্রিয়’ স্লোগান ছিল— ‘জার্মান সেনাদের বিরুদ্ধে জয়ী হতে আমেরিকানদের ছয় বছর লেগেছে, কিন্তু জার্মান নারীদের জয় করতে লাগে একদিন ও এক টুকরো চকোলেট।’

তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী ঘটনা নিয়ে মিথ্যা ধারণা প্রচলিত আছে যে, প্রয়োজনীয় কাপড়, খাবার, সিগারেট, কফির জন্য সৈন্যদের কাছে নিজেদের সমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন জার্মান নারীরা। যাকে ধর্ষণ না বলে অনেকটা পতিতাবৃত্তির মতোই বলা যায়।

এটা একটা ভুল ধারণা। সৈন্যরা জোরপূর্বক নারী-শিশুদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করত। দক্ষিণ জার্মানিতে আমেরিকান সৈন্যরা টানা ৪৮ ঘণ্টা ধরে পালাক্রমে ধর্ষণ করত বলেও উল্লেখ করেছেন গেবহার্ডট।



মন্তব্য চালু নেই