গুজরাট উপকুলে পাকিস্তানি নৌকায় বিস্ফোরণ

দ্বিতীয়টির ওপর নজর রাখছে ভারত

গুজরাট উপকূলে একটি পাকিস্তানি নৌকা বিস্ফোরিত হওয়ার পর করাচি থেকে আসা সন্দেহভাজন দ্বিতীয় নৌকাটির ওপর নজর রাখছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় কোস্ট গার্ডের প্রতিরোধের মুখে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সন্দেহভাজন ওই মাছ ধরার নৌকাটি বিস্ফোরিত হয়।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো দাবি করেছে, নতুন বছরের শুরুতে মুম্বাই হামলার মতো পাক সন্ত্রাসীদের একটি বড় ধরণের হামলার প্রচেষ্টা নসাৎ করে দিয়েছে উপকূলীয় রক্ষীরা।

শনিবার এক গোপন সূত্রের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ওই দুটি নৌকা একই সময়ে করাচি বন্দর থেকে ছেড়ে এসেছিল। প্রথমটি বিস্ফোরিত হওয়ার পর এখন দ্বিতীয় নৌকাটিকে সতর্ক দৃষ্টিতে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই গুজরাটেরর পোরবান্দার এলাকা থেকে উপকূলীয় রক্ষীদের একটি ড্রোনিয়ার বিমান ঘটনাস্থলে উড়ে গেছে। পাকিস্তানের ওই নৌকাটি সিন্ধু প্রদেশের থাট্টা জেলার কেটি বন্দর থেকে ছেড়ে এসেছে বলে জানা গেছে।

উর্ধ্বতন এক ভারতীয় কর্মকর্তা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, গত ৩১ ডিসেম্বর পাকিস্তান থেকে ছেড়ে আসা দুটি নৌকাকে প্রথম থেকেই কড়া নজরে রেখেছিল উপকূলীয় রক্ষীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘উপকূলীয় রক্ষীদের ধাওয়ার মুখে প্রথম নৌকাটি বিস্ফোরিত হওয়ার পর এখন দ্বিতীয় নৌকাটিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে উপকূলীয় রক্ষীরা। নৌকাটি উপকূলের জেলে নৌকাগুলোর সঙ্গে মিশে যাওয়া এটিকে সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।’

তবে অন্য সূত্র বলছে, নৌকাটির আনুমানিক অবস্থানের সন্ধান পেয়েছে উপকুলূয় রক্ষীরা এবং বিমান থেকে গোটা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

এর আগে প্রথম নৌকাটি বিস্ফোরণ সম্পর্ক ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রকে উদ্ধৃত করে ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছিল, করাচির অদূরের কেটি বান্ডার থেকে গুজরাটের পোড়বন্দর আসার পথে আরব সাগরে ভারতীয় কোস্টগার্ডদের ধাওয়ার মুখে বিস্ফোরিত হয়েছিল নৌকাটি। নৌকাটিতে চার আরোহী ছিল। তারা ঘটনাস্থলেই ডুবে যায়। তবে ঘটনার পর এখনও তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী।

এ সম্পর্কে অন্য এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন প্রথম নৌকাটিকে সনাক্ত করেছিল কোস্ট গার্ডদের জাহাজ ‘রাজরতন’। তখন সমুদ্র উত্তাল ছিল এবং নৌকা দুটি তাদের আলো নিভিয়ে দিয়েছিল। আমরা আমাদের রেডিও চ্যানেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হই। তখন আমরা নৌকাটি লক্ষ্য করে গুলি করি। জবাবে ওরাও গুলি করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে নৌকাতে বিস্ফোরণ ঘটে।

গোপন সূত্র বলছে, প্রথমটি বিস্ফোরিত হওয়ার পর জেলে নৌকাগুলোর ভিড়ে মিশে যায় দ্বিতীয় নৌকাটি এবং পরে পাকিস্তানে ফিরে যায়। তবে এখনও এটির ওপর নজর রাখছে ভারতীয় কোস্ট গার্ড।

এদিকে টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, গত ২৮ ডিসেম্বর আসন্ন হামলার ওপর বেশ কিছু গোয়েন্দা রিপোর্ট পাওয়ার পর নৌ বাহিনী এবং উপকুলীয় রক্ষীদের সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছিল। যার কারণে বৃহস্পতিবারের ওই হামলা বানচাল করা সম্ভব হয়েছে।

২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বাইয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার সঙ্গে এ ঘটনার মিলও রয়েছে। সে সময় পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিরা সাগরপথে ভারতে ঢুকেছিল। এরপর মুম্বাইয়ে টানা ৬০ ঘণ্টা ধরে চলেছিল জিম্মিদশা। এ ঘটনায় নিহত হয়েছিল ১৬৬ জন।



মন্তব্য চালু নেই