দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে সেটেলমেন্ট অফিসগুলো

সীমাহীন দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসগুলো। ভূমি মালিকদের হয়রানির পাশাপাশি কর্মকর্তারাই এখন অধীনস্থ সহকর্মীদের নানাভাবে হয়রানি করছেন।

জানা গেছে, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ভূমি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের বেপরোয়া দুর্নীতির কারণে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সরকারি সম্পত্তি ব্যক্তিবিশেষের নামে রেকর্ড হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে সিলেট, বরিশাল, নোয়াখালী ও দিনাজপুর জোনাল সেটেলমেন্টের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার (এএসও), কানুনগোসহ অধস্তন কর্মকর্তারা জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসারের (জেডএসও) বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির বিবরণ দিয়ে প্রতিকার চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।

আরও জানা যায়, ঢাকা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ পরিদর্শন করতে গেলে তাদের আপ্যায়ন, উপহার এবং তাদের খুশি করতে টাকা দিতে হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। যেসব মৌজায় আপত্তি মামলার আপিল সমাপ্তির পর্যায়ে, সেক্ষেত্রে প্রতিটি মামলার শুনানি গ্রহণের অনুমতির জন্য ১০ হাজার টাকা উৎকোচ নেয়া হচ্ছে। দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সহকর্মীদের কার্যক্রম তদারকি (পরিদর্শন) করতে গেলে জেডএসওকে দিতে হয় ৩ হাজার টাকা। মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কানুনগো, তহসিলদার, নাজিরসহ অধীনস্থদের নিয়ে প্রতি মাসে একটি সমন্বয় সভা করেন জেডএসও। প্রতিটি মাসিক সমন্বয় সভার খরচের জন্য প্রত্যেক অফিসারকে ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। বসদের খুশির টাকা সাধারণ মানুষের কাছ থেকেই আদায় করছেন এএসও, কানুনগো ও অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এছাড়া সাধারণ কর্মচারীদের এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় বদলির ক্ষেত্রে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বিশেষ সুবিধা আদায় করা হচ্ছে। জামালগঞ্জের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার (এএসও) সোলায়মানকে ২ লাখ টাকা উৎকোচ নিয়ে জকিগঞ্জের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার হিসেবে বদলি করা হয়। নিয়ম অনুসারে এএসও বদলির আদেশ দেয়া হয় মন্ত্রণালয় থেকে। সুতরাং ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি না হওয়ায় সোলায়মানের জকিগঞ্জে বদলি আদেশ ঝুলে গেছে। বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে এএসও মোজাম্মেল হককে কমলগঞ্জের শ্রীমঙ্গলের দায়িত্ব দেয়া হয়। বিষয়টি মন্ত্রণালয় কিংবা ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরকে অবহিত করা হয়নি। কয়েক মাসে অমিতোষ, মিজানুর রহমান চৌধুরী, জিতেন্দ্র দাস, মোঃ নূর উল্লা, অসীম ভূষণ সাহাসহ বেশ কয়েকজন এসওকে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রত্যেকেই ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ করে প্রেষণে নিয়োগ পেয়েছেন বলে জানা যায়।



মন্তব্য চালু নেই