বাংলাদেশে অন্তত ৩০ শতাংশ বিবাহিতা নারী স্বামীর দ্বারাই যৌন নির্যাতনের শিকার!

যৌন নির্যাতনের ঘটনা কেবল অপরিচিত পুরুষ দ্বারাই ঘটে? বহুকাল যাবত চলে আসা এই ভ্রান্ত ধারণা পরিবর্তন করে দিল সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি চিত্র। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত একটি জরিপ থেকে বের হয়ে এসেছে আমাদের সমাজের এই একটি ভয়াবহ সত্য। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের বিবাহিত নারীদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জীবনের কোনো না কোনো সময় স্বামীর মাধ্যমে যৌন নির্যাতনের শিকার হন! ২০ থেকে ৩৪ বছর বয়সী বিবাহিত নারীরা এ নির্যাতনের ক্ষেত্রে সবচাইতে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

জরিপে আরও পাওয়া যায় যে, শহরের তুলনায় গ্রামে এ ধরনের নির্যাতনের ঘটনা বেশি ঘটে। জরিপে অংশ নেয়া প্রায় ৩০ শতাংশ নারী জানিয়েছেন, স্বামীর ইচ্ছা অনুযায়ী যৌন সম্পর্ক না করলে স্বামী কী করবে, মারধোর করবে বা রাগ হবে, সেই ভয়ে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য হন তারা।

এ তথ্য পাওয়া গিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর দ্বারা প্রচালিত প্রথম নারী নির্যাতন কেন্দ্রিক জরিপ ‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন (ভিএডব্লিউ) সার্ভে ২০১১’ শীর্ষক জরিপে। গত ডিসেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে জরিপটি প্রকাশ করা হয়। স্বামীর মাধ্যমে যৌন নির্যাতন বলতে জরিপে বোঝানো হয়েছে- স্ত্রীর অনিচ্ছা সত্ত্বেও জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করা, নির্যাতনের ভয়ে শারীরিক সম্পর্কে সম্মত হওয়া, স্ত্রীকে এমন কিছু করতে বাধ্য করা যা স্ত্রী করতে চান না অথবা এতে অপমানিত বোধ করেন। এছাড়াও অন্যান্য যৌন নির্যাতনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে ১২ হাজারের বেশি নারী তথ্য দিয়েছেন।

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় ২০১১ সালের ১৯ থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। উল্লেখ্য যে, স্বামীর মাধ্যমে যে যৌন নিপীড়ন হয়, সেটিকে ‘নির্যাতন’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। তবে বাংলাদেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে (২০০০, সংশোধিত ২০০৩) বিবাহিত নারীদের যে যৌন অধিকার আছে বা স্ত্রীর অমতে স্বামী যে কোনো ধরনের যৌন আচরণ করতে পারেন না, সে বিষয়টির স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।



মন্তব্য চালু নেই