তুরস্কে বিমানবন্দরে বোমা হামলায় নিহত ৩৬
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে আতাতুর্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বন্দুক ও বোমা হামলায় অন্তত ৩৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১৫০ জন।
মঙ্গলবার রাতে তিন হামলাকারী বিমানবন্দরের প্রবেশমুখের কাছে গুলিবর্ষণ শুরু করলে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় হামলাকারীরা আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
তাৎক্ষণিকভাবে কেউ এ হামলার দায় স্বীকার না করলেও এর পেছনে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তুর্কি প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৫০ মিনিটে বিমানবন্দরের বহির্গমন হলরুমে এক হামলাকারী গুলিবর্ষণ শুরু করে। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে যাত্রীরা বিভিন্ন দিকে পালাতে শুরু করে।
পরে তিন হামলাকারী আগত যাত্রীদের হলরুমের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ এলাকার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ এ সময় তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে হামলাকারীরা বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের অধিকাংশই তুর্কি। তবে তাদের মধ্যে বিদেশিও রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম বলেছেন, ‘এ ঘটনার মাধ্যমে এটা আবারও পরিষ্কার হলো যে, সন্ত্রাসবাদ আন্তর্জাতিক হুমকি। নিরীহ জনগণকে লক্ষ্য করে পরিচালিত এ হামলা পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা।’
হামলাকারীরা ট্যাক্সিতে করে বিমানবন্দরে এসেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গুলি ছোড়ার পরপর হামলাকারীরা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এ হামলার জন্য আইএস দায়ী বলেও জানা গেছে।
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান বলেছেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ে এ হামলাকে টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘আজ ইস্তাম্বুলে যে বোমা হামলা হলো তা বিশ্বের যেকোনো শহরের যেকোনো বিমানবন্দরে ঘটতে পারে। পবিত্র রমজান মাসে চালানো এ হামলা এটাই ইঙ্গিত দেয় যে সন্ত্রাসবাদীদের কোনো বিশ্বাস ও মূল্যবোধ নেই।’
হামলার সময় বিমানবন্দরের যাত্রীদের আগমন হলে অতিথির জন্য অপেক্ষা করছিলেন আলি তেকিন নামে এক তুর্কি। তিনি বলেন, ‘প্রচণ্ড শব্দে ব্যাপক বিস্ফোরণ হয়েছে। ছাদ ভেঙে গেছে। বিমানবন্দরের ভেতরের অবস্থা এতটাই খারাপ যা, আপনি এটা চিনতেই পারবেন না। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
দুইগু নামে এক যাত্রী বলেন, ‘সবাই দৌড়াদৌড়ি করছিল। চারপাশে রক্ত আর ছিন্নভিন্ন দেহ। আমি দরজায় গুলির দাগ ও গর্ত দেখতে পেয়েছি।’
ইউরোপের অন্যতম ব্যস্ত আন্তর্জাতিক এই বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরটিকে অনেক দিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ বলা হচ্ছিল। কারণ যাত্রীদের প্রবেশপথে লাগেজ স্ক্যান করা হলেও সেখানে টার্মিনালে আসা গাড়ির জন্য কোনো স্ক্যানার নেই।
মন্তব্য চালু নেই