তাভেল্লা হত্যা: ‘বড় ভাই’ কাইয়ুমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

রাজধানীর গুলশানে ইতালীয় নাগরিক তাভেল্লা সিজার হত্যা মামলায় বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুম এবং সোহেল ওরফে ভাঙ্গীর সোহেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা এই মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণ করে এই পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। দিয়ে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করা হয়েছে।

২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গুলশানে ইতালীয় নাগরিক তাভেল্লা সিজারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুমকে নির্দেশদাতা ‘বড় ভাই’ হিসেবে শনাক্ত করে পুলিশ। কাইয়ুম বিদেশে চলে গেছেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য আছে।

নেদারল্যান্ডসভিত্তিক আইসিসিও কো-অপারেশন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রুফ (প্রফিটেবল অপরচুনিটিজ ফর ফুড সিকিউরিটি) কর্মসূচির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ছিলেন তাভেল্লা। এই হত্যার পর বাংলাদেশে বিদেশিদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। বেশ কিছু পশ্চিমা দেশ তার নাগরিকদেরকে বাংলাদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করে।

গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক গোলাম রাব্বানী গত ২৮ জুন বিএনপি নেতা কাইয়ুমসহ সাত জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

কাইয়ুম ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন তার ভাই আবদুল মতিন, তামজিদ আহমেদ ওরফে রুবেল ওরফে শুটার রুবেল, রাসেল চৌধুরী ওরফে চাক্কি রাসেল, মিনহাজুল আরেফিন রাসেল ওরফে ভাগনে রাসেল ও শাখাওয়াত হোসেন ওরফে শরিফ ও মো. সোহেল ওরফে ভাঙ্গরী সোহেল।

এর মধ্যে তামজিদ, রাসেল চৌধুরী, মিনহাজুল ও শাখাওয়াত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

স্বীকারোক্তিতে রাসেল চৌধুরী ও মিনহাজুল এই হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে এমএ মতিনের নাম বলেছেন। তবে মতিন রিমান্ডে ডিবির কাছে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও আদালতে স্বীকারোক্তি দেননি।

অভিযোগপত্রে যা বলা হয়েছে

আদালতে জমা দেয়া পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়, খুনিদের লক্ষ্য ছিল একজন শ্বেতাঙ্গকে হত্যা করে দেশে-বিদেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এই পরিকল্পনা করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সোহেলের কাছ থেকে পিস্তল ভাড়া নিয়ে খুনিরা তাভেল্লাকে হত্যা করে। মতিনের নির্দেশে ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর শাখাওয়াতের মোটরসাইকেল নিয়ে মিনহাজুল, তামজিদ, রাসেল চৌধুরী গুলশান ২-এর ৯০ নম্বর সড়কে যান। ওই সড়কের গভর্নর হাউসের সীমানা প্রাচীরের বাইরে ফুটপাতে নিরিবিলি ও অন্ধকার স্থানে তামজিদ গুলি করে তাভেল্লাকে হত্যা করেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুমের পরিকল্পনা ও অর্থায়নে তাভেল্লাকে হত্যা করা হয়। কাইয়ুম পরিকল্পনা করলেও তা বাস্তবায়ন করেন তাঁর ছোট ভাই আবদুল মতিন। পিস্তল সরবরাহকারী সোহেল গ্রেপ্তার না হওয়ায় পিস্তলটি উদ্ধার না সম্ভব হয়নি। তবে পিস্তলটি না পেলেও ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই