তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং

বাইরে প্রচণ্ড গরম। বাতাসের সঙ্গে মিশে আছে মাত্রাতিরিক্ত উষ্ণতা। আর এ কারণেই প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা ঘরের বাইরে থাকতে নারাজ সাধারণ মানুষ। কিন্তু বাস্তবতা বড়ই কঠিন। সবাইকে জীবিকার তাগিদে বের হতেই হচ্ছে। বাধ্য হয়ে বাইরে বের হলেও ঘরে ফেরার প্রহর গোনে মানুষগুলো। কিন্তু বিধিবাম, ঘরে ফিরেও শান্তির নাগাল পাচ্ছেন না তারা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং যেন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। অনেকটাই এমন,‌ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা।
বৈশাখের শুরু থেকে বাড়তে থাকে তাপমাত্রা। বর্তমানে তা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরে তথ্যমতে, বুধবার রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। সর্বনিম্ন ছিল ২৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র আজিজুর রহমান পলাশ বলেন, ‘প্রতিদিন তিনবার বিদ্যুৎ যায়। অতিরিক্ত গরমের কারণে রুম প্রচণ্ড গরম থাকে, এ কারণে ঠিকমতো পড়াশুনা করতে পারছি না।’ এমন সমস্যা রাজধানীর প্রায় প্রতিটি এলাকায়। মতিঝিল সংলগ্ন শাহাজানপুর এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী রতন দাস বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমের কারণে বেশিক্ষণ বাইরে থাকতে পারি না। বাসায় এসে দেখি বিদ্যুৎ নেই। আর এখানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকে না।’ শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা জুয়েল বলেন, ‘এক ঘণ্টা পরপর লোডশেডিং হয়। এ ক্ষেত্রে সব চেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছে শিশুরা। শিশুরা গরম সহ্য করতে পারে না। এ কারণে তাদের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে।’
এদিকে লোডশেডিংয়ের কথা স্বীকার করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। তারা বলছে, অতিরিক্ত গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া মেঘনাঘাটে একটি বিদ্যুৎ প্লান্ট নষ্ট থাকার কারণে লোডশেডিং হচ্ছে বলেও তারা দাবি করেন।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা সাইফুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমানে সারা বাংলাদেশে ৫শ থেকে ৬শ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৬ হাজার ৮শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। আর চাহিদা হচ্ছে ৭ হাজার ৪শ থেকে ৫শ মেগাওয়াট। চাহিদার তুলনায় যে ঘাটতি রয়েছে সেটা আমরা বিভিন্ন জায়গায় লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে পূরণ করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুধু রাজধানীতেই আমাদের প্রয়োজন ২ হাজার ৭শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।’ গত সোমবার মেঘনাঘাটে ৪৫০ মেগাওয়াটের একটি প্লান্ট নষ্ট হওয়ায় এ লোডশেডিং হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য জেনারেশন জালাল উদ্দিন বলেন, ‘মেঘনাঘাটে আমাদের একটা ৪৫০ মেঘাওয়াটের প্লান্ট নষ্ট হয়েছে। এছাড়া তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে মেশিনগুলো তাড়াতাড়ি গরম হচ্ছে। তাই কিছুক্ষণের জন্য মেশিনগুলো বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছি। মেশিনগুলো ৮ ঘণ্টা চালানোর কথা সেগুলো এখন ২০ ঘণ্টার বেশি চালানো হচ্ছে।’


মন্তব্য চালু নেই