তবে কি হিলারীই হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট?
জিতেও হেরে গেছেন হিলারী আবার হেরেও জিতে গেছেন ট্রাম্প। আর এ নিয়ে স্বস্তিতে নেই এই দুই প্রার্থীর কেউই। রাশিয়ার হস্তক্ষেপে ট্রাম্প নির্বাচনে জিতেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। ইতোমধ্যে হোয়াইট হাউস ছাড়ার আগেই এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে রিপোর্ট পেশ করার জন্য প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নির্দেশ দিয়েছেন গোয়েন্দা সংস্থাকে। ফলে রুশ হ্যাকিংয়ে বিষয়টি স্পষ্ট হলে হিলারী ক্লিন্টনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকেই।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবার নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তা নিয়ে দেশটির প্রধান দুই রাজনৈতিক শিবির ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানরাও বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভোটপর্ব প্রভাবিত করায়, রাশিয়ান হ্যাকিং-য়ের অভিযোগ উঠল। এবিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। একথা জানিয়েছে, হোয়াইট হাউস হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নির্বাচনে বিজয়ী করার জন্য রাশিয়া প্রচ্ছন্নভাবে কাজ করেছে বলে বিশ্বাস করছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো, কয়েকটি সংবাদপত্রকে একথা জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো “খুবই আত্মবিশ্বাসী” যে ডেমোক্র্যাট দল এবং হিলারি ক্লিনটনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোগীর হ্যাকিংয়ের সাথে রাশিয়া যুক্ত ছিল। ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনেও একইরকম তথ্য উঠে এসেছে।
গত অক্টোবরে এসব হ্যাকিংয়ের জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে বক্তব্য দেন মার্কিন কর্মকর্তারা । তারা বলেন, রাশিয়া মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে।
এখন সিনিয়র কর্মকর্তারা বলছেন, তারা আত্মবিশ্বাসী যে রাশিয়ান হ্যাকাররা ডেমোক্র্যাটদের পাশাপাশি রিপাবলিকানদের কম্পিউটার সিস্টেমও হ্যাক করেছে, কিন্তু তারা রিপাবলিকান নেটওয়ার্কের তথ্য ফাঁস করেনি।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে, রুশরা ডেমোক্র্যাটদের তথ্য উইকিলিকসের কাছে পাচার করে।
ডেমোক্র্যাটদের জাতীয় কমিটি এবং মিসেস ক্লিনটনের প্রচারণা কমিটির প্রধান, জন পোডেস্টার ইমেইল হ্যাকিং নিয়ে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল ডেমোক্র্যাটরা।
প্রচারণার একপর্যায়ে মি. ট্রাম্পও রাশিয়ার নাম উল্লেখ করে তাদেরকে মিসেস ক্লিনটনের আরো ইমেইল “খুঁজে” বের করার আহ্বান জানান। পরবর্তীতে তিনি দাবী করেন যে তার সেই বক্তব্য ছিল বিদ্রূপাত্মক।
তবে ট্রাম্পের সহযোগীরা মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা, সিআইএ-র দাবী নাকচ করে দিয়ে বলছেন, “এই লোকগুলোই বলেছিল যে সাদ্দাম হোসেনের কাছে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে”। রুশ কর্মকর্তারাও বারবার হ্যাকিংয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।
এদিকে শুক্রবার, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় একাধিক সাইবার অ্যাটাকের বিষয়ে একটি তদন্ত করার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
মার্কিন ইনটেলিজেন্স কমিউনিটিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জানুয়ারিতে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই, তদন্তে দাঁড়ি টানতে তত্পর গোয়েন্দারা। যাতে ওবামা হোয়াইট হাউস ছাড়ার আগেই, রিপোর্ট তার হাতে তুলে দেওয়া যায়।
এবার মার্কিন মহাযুদ্ধের আগে থেকেই অবশ্য, নির্বাচন প্রভাবিত করতে নানা চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। তারই মধ্যে একটি ছিল, রাশিয়া সরকারেরই শীর্ষমহলের একাংশের মদতে, সাইবার হ্যাকিং। উদ্দেশ্য, ভোটের ফলাফলে কারচুপি। ভোটার রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমও হ্যাকারদের নজরে ছিল বলে অভিযোগ। এপ্রসঙ্গে ট্রাম্প বরাবর রাশিয়া-যোগের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। যদিও রিপাবলিকানদেরই একটা বড় অংশ, এই হ্যাকিং-তদন্তের পক্ষে।
মন্তব্য চালু নেই