মমতার মীমাংসার আশায় রাষ্ট্রপতি, তিস্তার আস্থায় মমতা

‘ঢাকা এলে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আসব

যতবার বাংলাদেশে আসবেন, ততবারই ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটিতে আসবেন বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুক্রবার বিকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর ঘুরে দেখে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এই দেশে আসব আর মুক্তি আন্দোলনের সবচেয়ে বড় পথিকৃত বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আসব না- সেটা কি করে হয়?”
বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সোজা ধানমন্ডিতে আসেন ভারতের তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট এই বাড়িতেই সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবকে। ঘাতকের গুলি থেকে রেহাই পায়নি তার পরিবারের ছয় বছরের শিশু থেকে শুরু করে অন্তঃসত্ত্বা নারীও।
মমতা বলেন, “এ বাড়ি দেখে বার বার মন খারাপ হয়ে যায়। একদিকে গুলির দাগ, রক্তের দাগ। এতোগুলো খুনের নিশানা দেখে মনটা খারাপ হয়ে যায়।” পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য ৩২ নম্বর সড়কে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। ৩২ নম্বরের পাশাপাশি উল্টো দিকে লেকের পাড়েও কাউকে চলাচল করতে দেওয়া হয়নি।
বিকাল ৫টা ৩৬ মিনিটে মমতা ও ও তার সফরসঙ্গীরা বঙ্গবন্ধু ভবনে এসে পৌঁছানোর পর প্রায় ২০ মিনিট ঘুরে ঘুরে দেখেন। বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র রেদওয়ান সিদ্দিক ববি এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বাংলাদেশ সফরের কথা মনে করে মমতা সাংবাদিকদের বলেন, “আমি ১৯৯৮ সালে এখানে এসেছিলাম আওয়ামী লীগের একটি কনফারেন্সে। তখন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৭ বছর আগে। তখনও এখানে এসেছিলাম। এর সাথে মুক্তি আন্দোলন, গণতন্ত্রের আন্দোলন- সব কিছু জড়িয়ে আছে।”

২০১১ সালে ভারতের তখনকার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গেও মমতার ঢাকায় আসার কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে তিনি সফর বাতিল করেন। মমতা বলেন, “এই বাড়িটি একটি আবেগ প্লাবিত জায়গা। এখানেই বঙ্গবন্ধু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সেদিন তার পরিবারের অনেকেই খুন হয়েছিলেন। তাদের রক্তমাখা চেহারা, রক্ত মাখা ফটোগুলো দেখা বিভীষিকাময়। এগুলো দেখে আমাদের গা শিউরে ওঠে।”

নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরার কথাও বলেন মমতা।

“অতীতকে স্মরণ করতে হয়। অতীতকে স্মরণ না করলে আমাদের প্রজন্ম জানবে কি করে মুক্তি আন্দোলনের কথা?”১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “আমাদের ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলা- এখানে যখন মুক্তি আন্দোলন চলছিল, তখন তাদের প্রত্যেক কথা, গান, স্লোগান, বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য আমাদের আবেগ জুড়ে ছিল।”আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে শুক্রবার রাতে ঢাকায় পৌঁছান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের প্রথম প্রহরে তিনি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।



মন্তব্য চালু নেই