ডাকাত ধরতে গিয়ে পুলিশ ‘লেজে গোবরে’
আসামি ধরতে গিয়ে ‘লেজে গোবরে’ হলো পুলিশ। যেমন-তেমন নয় একেবারে ডাকাতির আসামি। ডাকাত এসে লুকিয়েছিল শ্বশুরবাড়িতে। কিন্তু কনকনে ঠান্ডা হাওয়া বয়ে যাওয়া ঘন কুয়াশা ভরা ভোররাতে সবাই যখন ঘুমে, বাড়ির জামাতা ব্যস্ত অন্য কাজে। সে তখন কানে মাফলার পেঁচিয়ে বালতি বালতি গোবর জোগাড় করতে ব্যস্ত।
কারণটা কী, তা বোঝা গেল আরো কিছুক্ষণ পর। শনিবার ভোররাতে ডাকাতকে ধরতে পুলিশ যখন হানা দিল এই বাড়িতে, তখন পরিষ্কার হয়ে গেল সব।
পুলিশের কাছে খবর ছিল, সুমেন সরকার নামে ডাকাতটি তার শ্বশুরবাড়িতে লুকিয়ে আছে। পুলিশ বাড়িতে হানা দিতেই সুমেনও টের পেয়ে যায়। পুলিশ দেখেই দরজা খুলে দৌড়ে পালায় সে। পুলিশও ছাড়ার পাত্র নয়। কিন্তু ওর শ্বশুরবাড়ির উঠোনে আর পাশের গলির রাস্তায় পড়ে থাকা গোবরে পা পিছলে পড়েন একের পর এক বুট পরা পুলিশ। ইউনিফর্মে, গায়ে গোবর লেপে একসার। দুর্গন্ধে টেকা দায়। রাস্তায় অল্পবিস্তর কাদাও ছিল। সব মিলিয়ে হাড়কাঁপানো ঠান্ডাটা যেন আরো বাড়িয়ে দিল এই কাদা-গোবরমাখা দশা। কিন্তু ওই পথেই ততক্ষণে খালি পায়ে দৌড়ে পগারপার সুমেন। লেজে গোবরে অবস্থায় তখনকার মতো সুমেনকে আর বেশি দূর তাড়া করার ঝুঁকি নেয়নি পুলিশ।
অবশ্য পরদিন রাতে ধরা পড়েন সুমেন। জেরায় সে জানায়, পুলিশ যে তার শ্বশুরবাড়িতে হানা দিতে পারে, এমন আন্দাজ করেছিল সে-ও। সেই মতো শ্বশুরবাড়ির গোয়াল থেকে গোবর-কাদা জোগাড় করে রাস্তায় ছড়িয়ে রেখেছিল। জুতা পরা পুলিশ ওই পথে ছুটতে গেলে কী অবস্থা হতে পারে, তা আন্দাজ করেই শ্বশুরবাড়িতে রাতটা কাটানোর সিদ্ধান্ত নেয় সে।
রাস্তায় গোবর বিছিয়ে পালানোর এমন ফন্দি দেখে পুলিশরাও তাজ্জব। ৭ ডিসেম্বর এক বাড়িতে ডাকাতি হয়। তদন্তে নেমে দুই আসামিকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের জেরা করে ডাকাতির মূল পান্ডা সুমেনের খোঁজ মেলে। সোমবার বিকেলে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত আর একজনকেও ধরে ফেলে পুলিশ।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে পুলিশ মহলে আলোচনার কেন্দ্রে এখন সুমেন আর তার গোবর-কাণ্ড। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের হাবরা থানার কৃষ্ণনগর গ্রামে।
তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
মন্তব্য চালু নেই