‘টয়লেটে’ টিকে গেল সংসার!

জয়গোবিন্দ মণ্ডল-রিংকু দম্পতির প্রায় ১৪ বছরের সংসার ভেঙ্গেই যাচ্ছিল। কলহ, বাড়ি ছাড়া এমনকি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে তাদের ঝামেলা। অবশেষে ‘টয়লেটে’ টিকে গেল সংসার! হ্যাঁ, এমনটিই ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নাদিয়া জেলার মাজদিয়া গ্রামে। বাড়িতে একটি টয়লেট নির্মাণের ফলে বিবাদ মিটেছে জয়গোবিন্দ-রিংকু দম্পতির। পিটিআইয়ের রবিবারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০১ সালে বিয়ে হয়েছিল জয়গোবিন্দ ও রিংকুর। তাদের সংসার বেশ ভালোই চলছিল। দুই বছর আগে তাদের মধ্যে কলহের সূচনা হয়। ভারতের অনেক গ্রামের মতো মাজদিয়া গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দারই বাড়িতে টয়লেট নেই। মলত্যাগ করতে তাদের বাড়ির বাইরে ঝোঁপঝাড়ে যেতে হয়। দিনমজুর জয়গোবিন্দের বাড়িও এমনই। বিয়ের পর থেকে নিয়মিত বাড়ির বাইরে গিয়ে মলত্যাগ করতেন রিংকু। দুই বছর আগে জয়গোবিন্দ অভিযোগ করে মলত্যাগের নাম করে রিংকু বাইরে বেশি সময় কাটাচ্ছে। এমনকি দিনে একাধিকবার সে মলত্যাগের জন্য বাইরে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলে জয়গোবিন্দ। তার অভিযোগ, রিংকু কারো সাথে প্রেম করছে। তবে বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে রিংকু। ৩০ বছর বয়সী রিংকু জানায়, নির্জন জায়গা খুঁজতে কয়েক মিনিট সময় লাগায় দেরি হয়ে থাকে। কিন্তু তার স্বামী অযথাই তাকে সন্দেহ করছে। বিষয়টি এক সময় কলহে রূপ নেয় এবং রিংকুকে তার স্বামী মারধর করে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। রিংকু জানান, তার স্বামী নিয়মিত তাকে মারধর শুরু করলে তিনি মায়ের কাছে চলে আসেন। এরপর ভারতীয় পেনাল কোডের ৪৯৮-এ ধারায় পারিবারিক সহিংসতার অভিযোগে জয়গোবিন্দের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। কলকাতা হাইকোর্টে মামলাটি উত্থাপিত হলে তদন্তে দেখা যায়, এই কলহের নেপথ্যে রয়েছে টয়লেট। দুই দম্পতিও বুঝতে পারে টয়লেটেই তাদের প্রকৃত সমাধান! এরপর জেলা প্রশাসনের ‘সবার শৌচাগার’ প্রকল্পের অধীনে জয়গোবিন্দের বাড়িতে বিনামূল্যে একটি টয়লেট নির্মাণ করে দেওয়া হয়। টয়লেট নির্মাণের পর আবারও স্বামীর সংসারে ফিরে আসেন রিংকু। অতঃপর ‘ভিলেন’ টয়লেটকে নিয়েই শুরু হয়েছে তাদের সুখের সংসার।



মন্তব্য চালু নেই