ট্রাম্প জেতার পরই যুক্তরাষ্ট্রে মাথাচাড়া দিয়েছে বর্ণবাদ
যা আশঙ্কা করা হচ্ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি যাচ্ছে সেদিকেই। রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারে মুসলমান, অবৈধ অভিবাসীদেরকে ব্যাপকভাবে আক্রমণ করেছিলেন। বলেছিলেন শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের কথা। ভোটে জেতার পর ট্রাম্পের সুর অনেকটা নরম হলেও এরই মধ্যে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে যেখানে আক্রান্ত হচ্ছে সংখ্যালঘুরা। বেশি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন কৃষ্ণাঙ্গরা।
আক্রান্ত হচ্ছেন নারীরাও। ভুক্তভোগীরা জানান, এখন পর্যন্ত শারীরিক হামলা না হলেও ব্যাপকভাবে বর্ণবাদী ও উগ্র অভিবাসনবিরোধী গালিগালাজ শুনতে হচ্ছে তাদেরকে।
গত ৮ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে যে বিক্ষোভ হচ্ছে তার অন্যতম প্রধান দারণ উগ্রবাদের বিস্তারের আশঙ্কা।
এই বিক্ষোভের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ দিনে দুইশ একটি বর্ণবাদী ও উগ্রবাদী হয়রানির ঘটনা রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট। একাধিক ভুক্তভোগী বলেছেন, ট্রাম্পের উগ্রবাদী কথাবার্তাই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুসিয়ানা অঙ্গরাজ্যের একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারী অভিযোগ করেছেন, তিনি রাস্তা পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এমন সময় তিনজন শ্বেতাঙ্গ তাকে উদ্দেশ্য করে কৃষ্ণাঙ্গদেরকে ভীষণ বাজে ভাষায় গালি দেয়।
বোস্টনে একজন কৃষ্ণাঙ্গ শিক্ষার্থী জানান, একজন শ্বেতাঙ্গ শিক্ষার্থী তাকে বলেছেন, ‘গত আট বছর ধরে কৃষ্ণাঙ্গদের শাসনের শাস্তি এটি।’
আমেরিকার প্রথম কালো প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০৮ সালে বারাক ওবামা নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১২ সালেও তিনি প্রেসিডেন্ট হন। এই বিষয়টি নিয়েই কথা বলেছেন ওই শ্বেতাঙ্গ।
গত বুধবার ওয়াশিংটনে এক শিক্ষক স্কুল ক্যাফেটেরিয়াতে দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় বলেন, ‘একটি দেয়াল তৈরি করো।’
ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীদেরকে বলেন, ‘তুমি যদি এ দেশে(আমেরিকা) জন্মগ্রহণ না করো তাহলে তল্পতিতল্পাসহ চলে যাও।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উগ্রবাদের ঘটনা জরিপ এবং পর্যবেক্ষণ করে সাউর্দান পোভার্টি ল সেন্টার নামে একটি সংস্থা। সংস্থাটি জানায়, তাদের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর গত তিন দিনে দুইশটির বেশি উগ্রবাদের ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তারমধ্যে নারী বিদ্বেষী এবং অবমাননাকর ঘটনাও ঘটেছে।
সাউর্দান পোভার্টি ল সেন্টার আরও জানায়, সংবাদ প্রতিবেদন, সোশ্যাল মিডিয়া এবং তাদের ওয়েব সাইটে সরাসরি অভিযোগকৃত তথ্য থেকে তারা এই জরিপ করেছেন। নির্বাচনের পর স্থানীয় সময় ১১ নভেম্বর বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত পুরো যুক্তরাষ্ট্রেজুড়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট হয়রানি এবং হুমকির ঘটনা ঘটেছে ২০১টি।
সাউর্দান পোভার্টি ল সেন্টারের জরিপ অনুযায়ী যে অভিযোগগুলো তারা পেয়েছে, সেগুলো কৃষ্ণাঙ্গ ও নারীবিরোধী এবং সমকামীবিরোধী। অনেকগুলো ভাঙচুর এবং বিভিন্ন ব্যক্তিকে বাজে উপাধি দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
মন্তব্য চালু নেই