ট্রাম্প ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হচ্ছে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথমবারের মতো দেখা করতে যাচ্ছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানইয়াহু। ওবামার আমলে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন নিয়ে এক ভারসম্য নীতি পথে চলেছিল মার্কিন প্রশাসন। ট্রাম্পের যুগে আমেরিকা সেই নীতি থেকে সরে আসবে কি-না তা হয়তো জানা যাবে এই বৈঠকের পরে।
বুধবার(১৫ ফেব্রুয়ারি)হোয়াইট হাউসে দুই নেতার মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা খবরটি নিশ্চিত করেছে।
ট্রাম্পের শপথের পর এটাই বহুমাত্রিক সম্পর্কে সম্পর্কিত এই দুই দেশের শীর্ষ নেতার প্রথম বৈঠক। ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির পর বিগত মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় ইসরায়েলের। পরে এ বছর জানুয়ারিতে ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক ভয়াবহ তিক্ততায় পর্যবসিত হয়। তখন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানইয়াহু নতুন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে মিলে ফিলিস্তিনবিরোধী ভূমিকা নেওয়ার কথা জানান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ইসরায়েলের অবৈধ বসতির পক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান নেন। বিদায়ী ওবামা প্রশাসন-এর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে।
বুধবারের গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে ট্রাম্প এবং নেতানইয়াহু ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করবেন। সেখানে ফিলিস্তিনি ভূমিতে অবৈধ বসতির বিস্তৃতির প্রসঙ্গও আলাপ হবে। এছাড়া ইরানের সঙ্গে সংঘটিত মার্কিন শান্তিচুক্তিও আলোচ্য হবে। দুই নেতা সিরীয় যুদ্ধ নিয়েও আলোচনা করবেন বলে খবর দিয়েছে আলজাজিরা।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র শন স্পাইসার জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় একটি পূণাঙ্গ চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা নিয়েও আলাপ হবে ট্রাম্প-নেতানইয়াহু বৈঠকে।
গত জানুয়ারিতে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বসতি নির্মাণ বন্ধে একটি প্রস্তাব পাশ হয়। ওই প্রস্তাবে বলা হয়, ‘১৯৬৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েল যে বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে, তার কোনও আইনি ভিত্তি নেই।’
ইসরায়েল সমর্থক হিসেবে পরিচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পরই ফিলিস্তিনের দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম এলাকায় বসতি স্থাপনে নতুন করে অনুমোদন দেয় ইসরায়েল। জেরুজালেমের ডেপুটি মেয়র মেইর টার্গমেন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বসতি স্থাপনের অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েল ফিলিস্তিনসহ অন্যান্য আরব রাষ্ট্রের একটা বড় অংশ দখল করে নেয়। পরে আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। আর দখলীকৃত ভূখণ্ডে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্য নির্ধারিত ওই সীমানার বাইরের বাদবাকি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এই সমাধান প্রকল্পকেই দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধান বলা হয়ে থাকে। তবে আজও তা আলোর মুখ দেখেনি।
১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী, বর্তমানে পূর্ব জেরুজালেম, গাজা ও পশ্চিম তীরের অধিকৃত ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অন্তত ১৯৭টি সেটেলার বসতি রয়েছে, যেখানে বাস করছেন প্রায় ৬ লাখ ইসরায়েলি। ওইসব স্থান থেকে প্রায় ২৬ লাখ ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করা হয়।
মন্তব্য চালু নেই