ট্রাম্পের মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্যের কারণে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি খুন!
যুক্তরাষ্ট্রে দুই বাংলাদেশি হত্যায় মুসলিম বিদ্বেষ কাজ করে থাকতে পারে এবং সুষ্ঠু তদন্ত হলে তা বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন নিহত ইমাম মাওলানা আলাউদ্দিন আখঞ্জি’র ছোট ভাই। তদন্তে বাংলাদেশ পুলিশের সহায়তা দরকার বলে জানিয়েছেন তিনি।
নিহত ইমাম মাওলানা আলাউদ্দিন আখঞ্জি’র ছোট ভাই জালাল উদ্দিন আখঞ্জি বাংলাদেশের হবিগঞ্জে বাস করেন। সেখান থেকে টেলিফোনে তিনি বলেন, ‘আমাদের জানা মতে তার (মাওলানা আলাউদ্দিন আখঞ্জি) কোনো ব্যক্তিগত শত্রু ছিলনা। আমরা এই তদন্তে বাংলাদেশি পুলিশেরও সহায়তা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। ’
শনিবার নিউইয়র্কে দুর্বৃত্তের গুলিতে মাওলানা আলাউদ্দিন আখঞ্জি এবং তারা মিয়া নামের দুই বাংলাদেশি নিহত হন। আলাউদ্দিন ওজোন পার্ক এলাকার আল-ফোরকান জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন। তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায়। আলাউদ্দিনের বন্ধু তারা মিয়ার (৬৪) বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জের জাঙ্গালহাটা গ্রামে।
দুই বাংলাদেশি হত্যার ঘটনায় অস্কার মোরেল (৩৫) নামে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। অস্কার ব্রুকলিনের বাসিন্দা। রবিবার রাতে পুলিশ তাকে তার বাড়ি থেকে আটক করে। নিউইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, অস্কার মোরেলের বিরুদ্ধে সোমবার জোড়াখুনের অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে দুই বাংলাদেশি খুনের ঘটনার তদন্তে সহযোগিতা করার আগ্রহ দেখিয়েছে বাংলাদেশের পুলিশ। পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপরাধ) হুমায়ুন কবির সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘‘যেহেতু ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রে ঘটেছে, তাই ওই দেশের পুলিশই তদন্ত করবে, তবে তারা কোনো সহযোগিতা চাইলে আমরা তা করব। ’’ বাংলাদেশের কেউ এর সঙ্গে জড়িত আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এ ধরণের তথ্য পাওয়া গেলে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে। ’’ বিষয়টি পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখাশোনা করছে বলেও জানান তিনি।
নিহত আলাউদ্দিন আখঞ্জির ছোট ভাই জালাল উদ্দিন আখঞ্জি জানান, এরমধ্যে র্যাব ও পুলিশের সদস্যরা আমাদের গ্রামের বাড়িতে এসে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে গেছে। তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন আমাদের সঙ্গে। একদিন আগে র্যাবকে আমার বড় ভাই মহিউদ্দিন আখঞ্জি জানিয়েছেন, আমার নিহত ভাই যুক্তরাষ্ট্রে কিছু সমস্যার মধ্যে ছিলেন। তিনি যে মসজিদে নামাজ পড়াতেন, সেখানে সালাফি এবং জাময়াত-মওদুদী পন্থিরা তার বিরোধিতা করছিল। তারা চাইছিল, তিনি যেন ওজোন পার্ক এলাকার আল-ফোরকান জামে মসজিদের ইমাম না থাকেন। ’’
তিনি বলেন, ‘‘তবে আমি মনে করি আমার ভাই সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্যের শিকার হয়ে থাকতে পারেন। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মুসলমানদের বের করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন, তার প্রতিক্রিয়া হতে পারে এটা। ’’
নিহত ইমামের ছোট ভাই আরো বলেন, ‘‘অ্যামেরিকা সারা দুনিয়ায় বিচার করে। আমার দাবি, আমি যেন আমার ভাই হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমি ন্যায় বিচার চাই। ’’
জালাল উদ্দিন আখঞ্জি বলেন, ‘‘আমার ভাইয়ের দাফন বাংলাদেশে গ্রামের বাড়িতেই হবে। তাঁর ও তাঁর বন্ধুর মরদেহ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। ’’-ডিডাব্লিউ।
মন্তব্য চালু নেই