জাপানের কর্মজীবী নারীরা কেন বিয়ে করেন না?

মিনা সাইতো জাপানের একজন কর্মজীবী নারী। তাঁর বয়স ৩৯ বছর। তিনি জাপানের সাপ্পোরো শহরে তাঁর মা-বাবার সঙ্গে থাকেন। একটা বিজ্ঞাপন কোম্পানিতে কাজ করেন। অফিসে কাজের সময় সকাল নয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা হলেও ব্যস্ত বলে তিনি প্রতিদিন কাজ করেন প্রায় রাত নয়টা পর্যন্ত। বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত দশটা হয়ে যায়।

এখন তাঁর কোনো প্রেমিক নেই। তাঁর জীবনে যে কোনো প্রেমিক ছিল না, তা নয়। যখন তিনি তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে বাইরে ঘুরতেন বা এক সাথে খাওয়া-দাওয়া করতেন, তখন তিনি স্বাভাবিকভাবেই আনন্দ পেতেন। তবে সেই আনন্দের চেয়ে তিনি বেশি শান্তি পেতেন তাঁর পরিবারের সঙ্গে থাকার সময়। কাজের ব্যস্ততার কারণে এখন তাঁর নতুন করে প্রেমে পড়ার সময় ও অনুভূতি কোনোটাই নেই। তাঁর মা-বাবা তাঁর বিয়ে নিয়ে দুশ্চিন্তা করলেও তাঁকে সরাসরি আগেও কিছু বলেননি, এখনো কিছু বলেন না।

জাপানি নারী। প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত২০১০ সালে জাপানের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা দেশে ৫০ বছর বয়সের পুরুষদের পাঁচজনের মধ্যে একজন এবং একই বয়সের নারীদের দশ জনের মধ্যে একজন অবিবাহিত। তাঁরা কখনোই বিয়ে করেননি। এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছিল, এ হার ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।

2ce22531f086e8835037a398e4ab0134-Pic-6

মিনার সমবয়সী বান্ধবীদের মধ্যেও অবিবাহিত বান্ধবী অনেক আছে। তাঁরা একই ভাবে মনে করছেন, বিয়ে করার তেমন প্রয়োজন নেই। কারণ তাঁদের চাকরি আছে, বাসা আছে, স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা আছে।

জাপানের সমাজে বর্তমানে জন্ম হার কমে যাচ্ছে। জাপানিরা সাধারণত বিবাহ পদ্ধতির মধ্যে সন্তানের জন্ম দেয়। জন্ম হার বাড়াতে চাইলে বিয়ের হারও বাড়ানো দরকার। সমাজের বিভিন্ন ব্যবস্থা ও নিয়ম বদল করে নেওয়া হলে জন্ম হার বাড়ানোর অবস্থা আরও ভালোভাবে তৈরি হবে। যেমন কর্মজীবী মায়েদের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া, সরকারি নার্সারি বা শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো ইত্যাদি। কিন্তু মুশকিল হলো বিয়ে মানুষের ব্যক্তিগত ধারণার ওপর অনেকটা নির্ভর করে।

বিয়ে করার প্রয়োজন আছে কি? জাপানের কর্মজীবী নারীদের এ রকম প্রশ্নের উত্তর আমরা কীভাবে দেব, তা অনেকটাই নির্ভর করবে বিয়ে আমরা কীভাবে দেখি তার ওপর।



মন্তব্য চালু নেই