জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন থেকে সৌদির সদস্যপদ স্থগিতের দাবি

ইয়েমেনে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন থেকে সৌদি আরবের সদস্যপদ স্থগিতের দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক দুটি মানবাধিকার সংগঠন। শিগগিরই জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন থেকে সৌদি আরবের সদস্যপদ স্থগিতের দাবি জানিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বুধবার জাতিসংঘের কাছে যৌথভাবে একটি চিঠি লিখেছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, মানবাধিকার কমিশনের সদস্য থাকাকালীন ব্যাপক মাত্রায় মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে সৌদি আরব, এবং ইয়েমেনে যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী হলেও মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যপদ ব্যবহার করে নিজেকে রক্ষা করছে।

চিঠিতে আন্তর্জাতিক এ দুই মানবাধিকার সংগঠন ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের হামলায় বেসামরিক নাগরিক হতাহতের তথ্য তুলে ধরেছে।

সংগঠন দুটি বলছে, তারা ইয়েমেনে সৌদি জোটের ৬৯টি বেআইনী হামলা নথিভূক্ত করেছেন, এদের বেশ কয়েকটি হামলা যুদ্ধাপরাধের সামিল; বাড়িঘর, মার্কেট, হাসপাতাল, স্কুল, বেসামরিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও মসজিদে হামলায় অন্তত ৯১৩ বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে।

মানবাধিকার এ দুটি সংগঠন বলছে, ইয়েমেনে ১৯টি বিমান হামলায় আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করেছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকটি হামলার লক্ষ্য ছিল বেসামরিক নাগরিক।

ইয়েমেনে সৌদি আরবের অবৈধ হামলা বন্ধ না করা পর্যন্ত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রতি মানবাধিকার কমিশন থেকে সৌদির সদস্যপদ স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব ধরনের অভিযোগে বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের আহ্বানও জানিয়েছে এ দুই সংগঠন। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তে সহযোগিতা দিতে সম্মত হয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের উপপরিচালক ফিলিপ্পে বোলোপিওন বলেন, ‘সৌদি আরব মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য হয়েও ইয়েমেনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক নজির স্থাপন করেছে এবং দায়বদ্ধতা এড়ানোর কৌশলের মাধ্যমে কাউন্সিলের আস্থা নষ্ট করেছে’।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রধান রিচার্ড বেনেট বলেছেন, কাউন্সিলের সক্রিয় সদস্য হিসেবে রাখায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ভাবমূর্তি এখন সংকটের মধ্যে পড়েছে। সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য দেশটি এই সদস্যপদ ব্যবহার করেছে; যা ভয়াবহ ভণ্ডামি।

জাতিসংঘের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, হুথি বিদ্রোহীদের আন্দোলনের মুখে পালিয়ে থাকা ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদিকে ক্ষমতায় বসাতে গত বছরের মার্চ থেকে হামলা শুরু করে সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব জোট। সৌদি জোটের বিমান হামলা এখন পর্যন্ত অন্তত সাড়ে তিন হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ছয় হাজার দুইশ মানুষ। এসব হামলায় গৃহহীন হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।

সূত্র : আরটি.কম।



মন্তব্য চালু নেই