ছাত্রলীগ নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে গণধোলাই : ছাত্রদল
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে ছাত্রলীগ যে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে তা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে তাদের গণধোলাই দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
সোমবার বিকেলে নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুমকি দেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান। এ সময় ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসানসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আকরামুল হাসান বলেন, ‘নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা না করলে সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাজপথে গণধোলাই দিয়ে ছাত্রলীগকে রাজনৈতিক শিষ্টাচার শেখাবে ছাত্রদল।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা করে যুক্তির আলোকে ঐতিহাসিক সত্যগুলো তুলে ধরছেন। এতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। তারেক রহমান লন্ডনে একাধিক আলোচনাসভায় মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী নেতৃত্বের ব্যর্থতা তুলে ধরেছেন। এসব বক্তব্য তার নিজের নয়। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন গবেষক ও লেখকের লেখা থেকে তিনি এসব সত্য তথ্য তুলে ধরেছেন। এসব লেখকদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।’
আকরামুল হাসান অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। তাদের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অপহরণ এবং খুনের ঘটনায় শিক্ষাঙ্গনসহ সারাদেশ এখন মৃত্যুপুরী। বিগত আওয়ামী সরকারের পাঁচ বছর ও বর্তমান অবৈধ সরকারের এক বছরে নিজেদের কোন্দলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খুন হয়েছে ৫০ জন মেধাবী ছাত্র।
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দানব ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ছাত্রদলের সাংগঠনিক নেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সম্পর্কে ধারাবাহিকভাবে বিরূপ মন্তব্য করে আসছে। ছাত্রদল মনে করে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সারাদেশে যে খুনের রাজত্ব কায়েম করেছে, সেই ধারাবাহিকতায় ছাত্রলীগও দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মেধাবী ছাত্রদের একের পর এক খুন করে নিজেদের হাত রক্তে রঞ্জিত করছে। জনধিকৃত ছাত্রলীগ ২৭ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার পূর্বনির্ধারিত সমাবেশস্থলে সমাবেশ আহ্বান করে তা প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে, যা ছাত্রদলসহ ছাত্রসমাজকে বিস্মিত ও হতবাক করেছে। ছাত্রদল মনে করে ছাত্রলীগের এ বক্তব্য হাস্যকর ও অর্বাচীনের আস্ফালন। খালেদা জিয়ার সমাবেশকে প্রতিহত করার ঘোষণার পরিণাম কি ভয়াবহ হতে পারে ছাত্রলীগকে তা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানাই।’
‘২৭ ডিসেম্বর গাজীপুরে খালেদা জিয়ার পূর্বনির্ধারিত সমাবেশসহ সব সমাবেশ নির্ধারিত জায়গায় নির্দিষ্ট সময়েই হবে। খালেদা জিয়ার সমাবেশ সফল করার জন্য গাজীপুরসহ অন্যান্য এলাকায় যে ভাষায় কথা বলা দরকার এবং যে পদ্ধতিতে কাজ করা দরকার তা করতে ছাত্রদল বদ্ধপরিকর’, বলেন আকরামুল হাসান।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল সভাপতি রাজিব আহসান বলেন, ‘আন্দোলনে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। ছাত্রদল ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী আন্দোলনে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন ঘটাতে মাঠে থাকবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে রাজিব বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্রমনা প্রগতিশীল যত ছাত্রসংগঠন আছে, সবার সঙ্গেই আমাদের রাজনৈতিক যোগাযোগ আছে। প্রয়োজনে হাসিনা পতন আন্দোলনে এসব ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে ছাত্রদল ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামবে।’
তিনি জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল কমিটি গঠনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। শিগগিরিই কমিটি ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন, এজমল হোসেন পাইলট, তারেক উজ্জামান তারেক, আলমগীর হোসেন সোহান, ফয়সাল আহমেদ সজল, নাজমুল হাসান, মামুন বিল্লাহ, ইখতিয়ার রহমান কবির,আবদুল হান্নান মিয়া, খলিলুর রহমান খলিল, জহিরুল ইসলাম বিপ্লব, আবু আতিক আল হাসান মিন্টু, জাকির হোসেন খান ও জয়দেব জয় প্রমুখ।
মন্তব্য চালু নেই