চোটের শিকার এ বার রয়েস,যুদ্ধের আগেই ফাটল জার্মান প্রাচীরে
সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ তো ছিলই। এখন আবার চোটের অভিশাপ তাড়া করে চলেছে বিশ্বকাপকে। রাদামেল ফালকাও, ফ্র্যাঙ্ক রিবেরির পরে যে তালিকায় যোগ হলেন জার্মানির মার্কো রয়েস।
শুক্রবার রাতে আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে ম্য্যাচে গোড়ালিতে গুরুতর চোট পেয়ে বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল বরুসিয়া ডর্টমুন্ড তারকার। যিনি কয়েক দিন আগেই বলেছিলেন, “এটা হয়তো আমার বিশ্বকাপ।”
ভাগ্যের পাল্টা মারে টুর্নামেন্টের আগে জার্মান সমর্থকদের কাছে রয়েসের শেষ ছবি হয়ে থাকবে শুক্রবার রাতে তাঁর কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়ে বেরোনো। প্রথমার্ধে রয়েসের সৌজন্যে শুরুটা আক্রমণাত্মক হয়েছিল জার্মানির। যাঁর গতিতে ছিন্নভিন্ন হচ্ছিল আর্মেনিয়া রক্ষণ। গোলে শট মারা ছাড়াও ডিফেন্স চেরা পাসও বাড়াচ্ছিলেন বরুসিয়ার তারকা। কিন্তু বিরতির ঠিক আগেই আর্মেনিয়ার ফুটবলার আর্তুর ইয়াদিগেরিয়ানকে ট্যাকল করতে গিয়ে গোড়ালি মচকে যায় রয়েসের। খোঁড়াতে খোড়াঁতে চোখের জলে মাঠ ছাড়তে হয় তাঁকে। যার পরে হাসপাতালে পরীক্ষা করে জার্মান ফুটবল সংস্থা সরকারি ভাবে জানায়, রয়েসের বিশ্বকাপ স্বপ্নের এখানেই ইতি। প্রায় সাত সপ্তাহ আর অনুশীলন করতে পারবেন না পঁচিশ বছরের এই উইংগার।
বিশ্ব ফুটবলের সবথেকে ধারাবাহিক দল, খুনে মানসিকতার জন্য যারা সব সময়ই এক ধাপ এগিয়ে প্রতিপক্ষের থেকে, তারা যেন হঠাৎ করে কিছুটা বেসামাল। বেশ কয়েক জনের ফিটনেস নিয়ে আগে থেকেই প্রশ্ন ছিল। আর এ দিন তো ছিটকে গেলেন প্রথম একাদশের প্লেয়ারই।
অনুশোচনার সুরেই স্বপ্নভঙ্গের কথা বলছিলেন রয়েস। “কিছু বলার নেই আমার। খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু কী আর করব। ফুটবলে চোট লাগতেই পারে। তাই মেনে নিতেই হবে।” রয়েসকে হারিয়ে আশঙ্কায় জার্মান ফুটবলমহল। প্রাক্তন জার্মান তারকা ডিয়েটমার হামান যেমন টুইট করেন, “রয়েসকে হারানোয় ক্ষতি হল জার্মানির। ওর মতো প্রতিভা খুব কম আছে দলে। এই মুহূর্তে ওর পরিবর্ত কেউ নেই।”
রয়েসকে হারালেও জার্মান দাপট চলতে থাকল দ্বিতীয়ার্ধেও। ক্যামেরুনের সঙ্গে ড্র করার পরে আবার ছন্দে জোয়াকিম লো-র দল। আর্মেনিয়াকে ৬-১ উড়িয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগালকে আগাম সতর্কবার্তা পাঠিয়ে রাখলেন গোটজে-ক্লোজেরা। এ দিন স্কোরারের তালিকায় ছিলেন শুরলে, গোটজে (২), পোডলস্কি, হোয়েডেস। ছিলেন ক্লোজেও। যে গোলের সৌজন্যে সর্বকালের জন্য ইতিহাসে চলে গেলেন লাজ্জিও স্ট্রাইকার। ৬৯ গোল করে ভেঙে দিলেন গার্ড মুলারের রেকর্ড।
কিন্তু জার্মান দাপটের দিনেও প্রশ্ন উঠে এল, বিশ্বকাপের আগে কতটা ফিট জার্মান স্কোয়াড। এমনিতেই চোটের তালিকা বেড়ে চলায় জোয়াকিম লো-র দলকে ‘চলমান হাসপাতাল’ বলা হচ্ছে। সোয়াইস্টাইগার ও লাম এ দিন খেললেও এখনও পুরোপুরি ফিট নন তাঁরা। ম্যানুয়েল নয়ার এখনও কোনও প্রস্তুতি ম্যাচে অংশ নিতে পারেননি। তার উপরে শেষ মুহূর্তে রয়েসকে হারানোয় আরও সমস্যা বাড়ল কোচের। লো বলেন, “খারাপ লাগছে। রয়েস খুব ভাল খেলছিল। ফর্মে থাকলে ওর মতো ফুটবলারকে আটকানো মুশকিল।” সঙ্গে ব্রাজিলের আবহাওয়াও রাতের ঘুম উড়িয়েছে লো-এর। বলেই ফেললেন, “ব্রাজিলের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। না হলে সমস্যা হতে পারে।”
মন্তব্য চালু নেই