চাটমোহরে সাড়ে পাঁচ লাখ ব্যয়ে নির্মাণ হচ্ছে বাইজের নৌকা
কথায় বলে শখের দাম লাখ টাকা। এ কথা এখন বেমানান। শখের দাম লাখ টাকা নয় শখের দাম এখন কোটি কোটি টাকা। শখের মধ্যে আছে বৈচিত্রতাও। শৌখিনতা আভিজাত্যের ও প্রতীক। একেক জনের শখ একেক রকম। একেক গোষ্ঠী, বংশ, জাতি- উপজাতির শখের মধ্যে রয়েছে ভিন্নতাও।
গত শুক্রবার পাবনার চাটমোহর উপজেলার আটলংকা বাজারে গেলে জানা যায়, ফৈলজানা ইউনিয়নের কচুগাড়ি গ্রামবাসীর সাধের কথা, সখের কথা। এ গ্রামের লোকেরা সখ করে বাহিজের জন্য একটি বিশাল আকৃতির নৌকা গড়ছেন। পাবনার চাটমোহর থেকে প্রায় ১৩ কিঃ মি দক্ষিণ পূর্বদিকে গ্রামটির অবস্থান।
সরেজমিন দেখা যায়, গ্রামের সবাই মিলে গড়ছেন এ নৌকা।
তবে তদারকির দায়িত্ব পালন করছেন মৃত এন্তাজ আলীর ছেলে কেয়াম উদ্দিন। তিনি জানান, বাইজের এ নৌকাটির দৈর্ঘ্য ১’শ ৫ ফিট। গোলই দুইটি (৯+৯)=১৮ ফিট। শাল ও কড়ই কাঠ দিয়ে গড়া হচ্ছে নেকৈাটি। নৌকাটি নির্মাণে খরচ হচ্ছে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
সিরাজগঞ্জের সোহাগপুর এলাকা থেকে কিনে আনা হয়েছে চেড়াই শাল কাঠ। ১৩ ফেব্রুয়ারী শুরু হয়েছে নির্মাণ কাজ। কাজ শেষ করতে ৭ জন মিস্ত্রীর সময় লেগেছে ৩৮ দিন। এখন চলছে ১শ বিশটি (২ সেট) বৈঠা তৈরীর কাজ। বাহাজের সময় ৬০ জন মানুষ এক যোগে বৈঠা বাইবেন। নৌকায় রং এবং নকশা আঁকার কাজ বাকী রয়েছে এখনো।
পাবনার সাঁথিয়ার টলট গ্রামের নৌকা তৈরি মিস্ত্রি ৫ ভাই রনজিৎ সুত্রধর, দুলাল সুত্রধর, অরুন সুত্রধর, শুকুমার সূত্রধর এবং বীরেণ সুত্রধর নির্মাণ করছেন নৌকাটি। তাদের সহায়তা করছেন এ এলাকার আক্কাস আলী ও তোফাজ্জ্বল মিস্ত্রী। এ নৌকায় রয়েছে ৩৮টি গুড়া।
নির্মাণ কাজ শেষ করতে লোহা লেগেছে প্রায় ৩ মন। মিস্ত্রিদের পারিশ্রমিক দিতে হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বিশাল আকৃতির এ নৌকা কেন তৈরী করছেন এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, নৌকার চলিত প্রায় উঠে যাচ্ছে। এখনো কোথাও কোথাও নৌকা বাইজ হয়ে থাকে। বাইজের উদ্দেশ্যে নৌকাটি তৈরী করছি। এ নৌকা আমাদের গ্রামের সুনাম বয়ে আনবে।
নির্মাণ ব্যয় কোথায় পেলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমাদের গ্রামের পাশে রয়েছে ডিকসীর বিল। বর্ষা মৌসুমে এ বিলে কিছু মাছ থাকে। আমরা গ্রামবাসী মাছ গুলো মারবো না। গ্রামের সবাই মিলে জলাশয়টির আংশিক লীজ দিয়ে তা থেকে প্রাপ্ত অর্থ নৌকা তৈরীতে ব্যয় করছি। প্রতিদিন শত শত মানুষ নৌকাটি দেখার জন্য ভীড় জমাচ্ছেন এ গ্রামটিতে।
মন্তব্য চালু নেই