চাঞ্চল্য ফিরেছে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে

সরকারের ইতিবাচক মনোভাব ও স্টেকহোল্ডারদের নানামুখি তৎপরতায় স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে দেশের শেয়ার বাজার। বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও অংশগ্রহন বাড়ছে। ফলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে বিনিয়োগকারীদের আনাগোনা বাড়ছে, চাঞ্চল্য ফিরেছে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে বাজারে লেনদেন ও মূল্য সূচক ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রোববার মতিঝিলের বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজে গিয়ে দেখা গেছে, শেয়ার কেনাবেচা করতে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে বিনিয়োগকারীদের ভিড় বাড়ছে। বেলা যতই বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের পদচারণা ততই বাড়ছে। দীর্ঘ দিন নিষ্ক্রিয় ছিলেন এমন বিনিয়োগকারীরাও বাজারে ফিরছে বলে জানা গেছে ব্রোকারেজ হাউজগুলো সূত্রে।

ব্রোকারেজ হাউজ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, সম্প্রতি সরকারের নেয়া বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপ, বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিবাচক ভূমিকায় শেয়ারবাজার স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে। এরমধ্যে রয়েছে সঞ্চয়পত্র সুদের হার কমানো, ব্যাংক সুদের হার কমা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সরকারি শেয়ার অফলোডের খবর। সব মিলিয়ে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে। এতে খুশি ব্রোকারেজ মালিকরাও।

এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক ও শাকিল রিজভী স্টক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাকিল রিজভী বলেন, শেয়ারবাজার চাঙ্গা করতে সরকারের নানা পদক্ষেপের ঘোষণায় অনেক বিনিয়োগকারী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বাজার উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এতে করে আগামীতে বাজার আরো উন্নতি হবে। তাছাড়া বর্তমান বাজারে দেশি বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি বিদেশিরাও সক্রিয়। আগামীতে বাজার আরো ইতিবাচক হবে বলে তিনি মনে করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিদেশিরাও দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে সক্রিয় হচ্ছেন। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরেছে। ফলে সক্রিয় হচ্ছে নিষ্ক্রিয়রা। এসব কিছু মিলিয়ে বাজারে স্বাভাবিক ধারা বিরাজ করছে।

অর্থনীতিবিদ ও শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, মন্দা বাজারে বিনিয়োগকারীরা অনেক লোকসান গুনতে হয়েছে। বর্তমান বাজারে লেনদেন স্বাভাবিক গতিতে ফিরেছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ছে। তাই বিনিয়োগকারীদেরও আনাগোনা বাড়ছে। তবে আইপিওর মাধ্যমে ভালো মানের কোম্পানি বাজারে আসতে না পারলে বাজারে বেশি দিন স্বাভাবিক থাকা কষ্টকর হবে বলে মনে করেন তিনি।

বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজারের টানা পতনের কবলে পড়ে বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারিয়ে বাজার থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয়। কিন্তু গত দুই মাস ধরে বাজারে চরম উত্থান-পতন দেখা যায়নি। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা বাজারের প্রতি আস্থা ফিরে পারছেন।

দীর্ঘ দিন নিষ্ক্রিয় থেকে ফের বাজারে ফিরেছেন, এমন একজন বিনিয়োগকারী আনিস উজ জামান। তিনি বলেন, ২০১০ সালের ধসে প্রায় ২০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। তারপর বাজারে স্বাভাবিক গতি দেখা যায়নি। বর্তমান বাজার স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে বলে আবারও বিনিয়োগে ফিরেছি। আশা করি বাজারে আরো উন্নতি হবে। আর তাতে আমার মতো যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তারা তা কাটিয়ে উঠতে পারবে।



মন্তব্য চালু নেই