চলনবিলে গমের বাম্পার ফলন ॥ চলছে কাটা ও মাড়াই

চলতি মৌসুমে পাবনার চাটমোহরসহ চলনবিলে গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলছে কাটা ও মাড়াই উৎসব। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গম চাষীদের মুখে দেখা যাচ্ছে স্বস্তির নিঃশ্বাস। আগামি কয়েকদিনের মধ্যেই গম কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শেষ হবে। দাম ও ফলন মোটামুটি ভাল হওয়ায় চলনবিলাঞ্চলের চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, সিংড়া, তাড়াশ, উল্লাপাড়াসহ এর আশ পাশ এলাকার কৃষক লাভবান হবে বলে জানা গেছে।
এ অঞ্চলে সাধারণত প্রদীপ, বিজয় ও শতাব্দী জাতের গম চাষ হয়ে থাকে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর চাটমোহরে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে। অর্জন হয়েছে ৭ হাজার ৭শ ৯০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯শ ৯০ হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত গম চাষ চাষ হয়েছে। গত বছর চাটমোহরে গম চাষ হয়েছিল ৭ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে।
গত বছরের চেয়ে এ বছর ৫শ ৯০ হেক্টর জমিতে গম চাষ বেশি হয়েছে। বর্তমান বাজারে প্রতি মন নতুন গম বিক্রি হচ্ছে ৯শ ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকায়। প্রতি বিঘা জমিতে গমের বীজ লাগে ১৫ কেজি। বীজের দাম পরে ৬শ টাকার মত। বীজ বপনের সময় জমিতে দুই চাষ দিতে হয় তাতে খরচ পরে ৫শ টাকা।
বীজ বপনের সময় বিঘাপ্রতি ২০ কেজি ড্যাপ, ১২ কেজি পটাশ, ১২ কেজি জিপসাম, দেড় কিজি দস্তা ও ১ কেজি বোরণ সার প্রয়োগ করতে হয়। চারার বয়স ১৭ থেকে ২১ দিন হলে সেচ দিতে হয় এবং সেচের পর বিঘা প্রতি ১৫ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হয়। প্রথম সেচের ৩০ থেকে ৩৫ দিন পর দ্বিতীয় দফা সেচ দিতে হয় এবং বিঘা প্রতি ১০ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হয়। দুই দফা সেচবাবদ বিঘাপ্রতি খরচ হয় ১ হাজার টাকা।
কাটার সময় বিঘা প্রতি খরচ হয় ১ হাজার ৪শ থেকে ১ হাজার ৫শ টাকা। চাষ, বীজ, সার, সেচ, কর্তন ও মারাই বাবদ বিঘাপ্রতি খরচ পরে ৬ হাজার টাকার মতো। প্রতি বিঘা জমিতে গমের গড় ফলন হয় ১২ মন। অর্থাৎ ১ বিঘা জমিতে গম চাষ করে কৃষক ৬ হাজার টাকা লাভ করছেন ৪ মাসে।
চাটমোহর পৌরসদরের জিরোপয়েন্ট এলাকার গম চাষী জীতেন্দ্রনাথ সরকার জানান, পৌরসদরের নার্সারী সংলগ্ন মাঠে ৪ বিঘা জমিতে গম বপন করেছেন তিনি। দু এক দিনের মধ্যে গম কাটবেন। ১২/১৩ মন হারে ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি।
এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (তথ্য) মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, চলনবিল এলাকার পলি মিশ্রিত মাটি গম চাষের উপযোগী হওয়ায় এবং এবছর আবহাওয়া গম চাষের উপযোগি হওয়ায় এ বছর গমের ফলন ভাল হচ্ছে।
মন্তব্য চালু নেই