এখন রাজনীতিতে আদর্শ নেই বলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমি ব্যথিত হই বিভিন্ন রাস্তায় বঙ্গবন্ধুর ছবির পাশে চাঁদাবাজ, টাউট বাটপার, ভূমিদস্যু ও লুটেরাদের ছবি সম্বলিত ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড দেখে। এ সব চাঁদাবাজ, টাউট, বাটপারদের ছবি বঙ্গবন্ধুর পাশে দেখতে চাই না।’

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এ সভার আয়োজন করে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে এক ধরনের মানুষ এ অপকর্ম করে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে কোনো আপস নেই, তাদেরকে নিবৃত্ত করতে হবে।

তিনি বলেন, যেখানেই বঙ্গবন্ধুর পাশে চাঁদাবাজ, টাউট, বাটপার, ভূমিদস্যু ও লুটেরাদের ছবি সংবলিত ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড দেখবেন, সেগুলো ছিঁড়ে ফেলবেন। তাতেই বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে। আর এ কাজ যারা করবেন, তারাই হবেন বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের অনুসারী।

ভাষণ-বক্তৃতা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে প্রতিষ্ঠিত করার দরকার নেই উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়েই আছেন। এই মাটি যতদিন থাকবে, বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত করা যাবে না।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এখানকার ক’জনে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী পড়েছি? বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী অনুসরণই রাজনীতির জন্য যথেষ্ট। তাহলেই রাজনীতি আদর্শের দিকে যাবে, মূল্যবোধের দিকে যাবে। আজকের রাজনীতিতে আদর্শ নেই।

তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের রাজনীতি এতটাই প্রতিহিংসা পরায়ণ, অন্ধের মতো আক্রোশের। এখানে কর্মসম্পর্ক কীভাবে গড়ে উঠবে?

ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা শ্রেণী বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা ও জয়কে অপহরণ চেষ্টা করে কর্মসম্পর্কের পরিবেশ বিষাক্ত করেছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনেও হরতাল-অবরোধ ডেকেছে। এরচেয়ে দুর্ভাগ্য কী হতে পারে?

বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করে তিনি বলেন, আইএসের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এলায়েন্স গঠন করে দমন করছে ওয়াশিংটন। বাংলাদেশে আইএস স্টাইলে কর্মকাণ্ড করছে বিএনপি, তাদের সঙ্গে সংলাপ করে লাভ কি? সংলাপ করতে হলে সম্পূর্ণভাবে এই সন্ত্রাস-সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। তারপর দেখা যাবে সংলাপ হবে কি না।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশে আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, অযৌক্তিক কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলন যৌক্তিক পরিণতি নেওয়া যায় না। ভুল পথে ভাল ফল হয় না।

বিএনপির আন্দোলন সরকার হটানোর জন্য নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের আন্দোলন বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে। তারা আন্দোলনের নামে নাশকতা করছে।

চিত্রনায়িকা দিলারা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা মহানগরের সহ-সভাপতি ফয়েজউদ্দিন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, অভিনেত্রী ফাল্গুনী হামিদ প্রমুখ।