পরিবহন শ্রমিক লীগের ঘেরাও কর্মসূচি বৃহস্পতিবার

গুলশান কার্যালয়ে ‘অরক্ষিত’ খালেদা

২০ দলীয় জোটের প্রধান খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় বৃহস্পতিবার ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক লীগ ও গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ নামের দু’টি সংগঠন। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ সংগঠনগুলোর ঘেরাও কর্মসূচির কারণে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাড়তি নিরাপত্তার প্রস্তুতি দেখা যায়নি। এর আগে ৩ জানুয়ারি থেকে প্রায় ১৫ দিন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে কড়া পুলিশি পাহারা ছিল।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত পরিবহন শ্রমিক লীগ কয়েকদিন আগে থেকেই বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়ে আসছে। তাদের ঘোষিত কর্মসূচি সফল করতে বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লিফলেট বিতরণ করেছে সংগঠনটি। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনটি তাদের প্রস্তুতিমূলক সভাও করে। এ দিন থেকে তারা লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে জনসংযোগ শুরু করে। সংগঠনটির আল্টিমেটাম অনুযায়ী, বুধবারের মধ্যে (২১ জানুয়ারি, ২০১৫) বিএনপির ডাকা লাগাতার অবরোধ প্রত্যাহার না করা হলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় ঘেরাও করবে তারা।

এদিকে অগ্নিকাণ্ড, ভাঙচুর, হরতাল ও অবরোধের প্রতিবাদে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় বৃহস্পতিবার ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বুধবার কর্মসূচির কথা জানানো হয়েছে। সংগঠনের সদস্য সচিব বদরুদ্দোজা নিজাম বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।

গত ৫ জানুয়ারির দুই দিন আগে থেকেই খালেদা জিয়াকে ‘নিরাপত্তা’ দেওয়া শুরু হয়। এ নিরাপত্তায় তিনি গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ ছিলেন ১৮ জানুয়ারি মধ্য রাত পর্যন্ত। এ সময় খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের আশপাশে একাধিকবার বালু, মাটি ও ইটের ট্রাক এনে প্রতিবন্ধকতাও সৃষ্টি করা হয়। অবরুদ্ধ থাকাকালীন ৩ জানুয়ারি রাত পৌনে ১২টা ও ৫ জানুয়ারি বেলা আড়াইটার দিকে খালেদা জিয়া তার কার্যালয় থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পুলিশি বাধার মুখে তিনি বের হতে পারেননি। আর ১৯ জানুয়ারি বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তা প্রত্যাহার হলেও নিজ কার্যালয় থেকে বের হননি খালেদা জিয়া। ওইদিন সন্ধ্যায় নিজেই এক সংবাদ সম্মেলনে তার ঘোষিত অনির্দিষ্টকালের অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

মন্তব্য জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু এই সরকার তো নিরাপত্তার নামে মানুষের জীবন অনিরাপদ ও অরক্ষিত করে ফেলে। খালেদা জিয়াকেও অরক্ষিত করতে চায় তারা।’

পরিবহন শ্রমিক লীগ ও গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ ঘোষিত গুলশান কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি সম্পর্কে কিছুই জানেই না পুলিশ। ঢাকা মহানগরের গুলশান বিভাগের পুলিশের উপ-কমিশনার লুৎফুল কবীরের কাছে জানতে চাইলে বুধবার বিকেলে তিনি বলেন, ‘এ রকম কোনো কর্মসূচির কথা আমার জানা নেই।’

খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান  বলেন, ‘অতিরিক্ত পুলিশ সরিয়ে (১৮ জানুয়ারি রাতে) নেওয়ার পর যে অবস্থা ছিল, এখনো তাই আছে। কার্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি।’



মন্তব্য চালু নেই