খাদিজার চিকিৎসা এবার সাভারের সিআরপিতে
সিলেটে ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের চাপাতির কোপে গুরুতর জখম খাদিজা আক্তার নার্গিস সুস্থ হওয়ার পথে। তাকে সোমবার সকাল ১১টা ২০ মিনিটে স্কয়ার হাসপাতাল থেকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সযোগে সাভারের সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অফ দ্য প্যারালাইজ্ড (সিআরপি)তে আনা হয়। এসময় খাদিজার বাবা মাশুক মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
সিআরপিতে পৌঁছার পর খাদিজাকে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানকার নিউরোলজিস্ট সাইদ উদ্দিন হেলালের চেম্বারে। সিআরপিতে তিনিই খাদিজার পরবর্তী চিকিৎসা প্রদান করবেন। প্রাথমিকভাবে খাদিজার সমস্যা শোনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এই চিকিৎসক।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, খাদিজা শরীরের বাম অংশে অবশ অনুভব করেন। এটি আমরা চিকিৎসার মাধ্যমে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করবো। খাদিজা যেহেতু সবেমাত্র হেড ইনজুরি কাটিয়ে উঠেছে তাই তাকে কথা কম বলতে হবে। ঠিক কত দিনে খাদিজা সুস্থ হয়ে উঠবেন সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না।
তবে দুই এক দিনের মধ্যে আমরা একটি ধারণা পাবো আসলে তার সেরে উঠতে কতদিন লাগবে। খাদিজাকে সুস্থ করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে গত শনিবার দুপুর ১২টায় স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খাদিজার চিকিৎসার অগ্রগতি সম্পর্কে জানানোর জন্য সংবাদ সম্মেলন করে।
সংবাদ সম্মেলনে স্কয়ার মেডিকেল সার্ভিসেসের ডিরেক্টর ডা. মির্জা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘গত ৩ অক্টোবর সিলেট মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা (১৯) দুর্বৃত্তের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে মারাত্মকভাবে জখম হয়। ৪ অক্টোবর সিলেটে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে মুমূর্ষু অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য স্কয়ার হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ইমার্জেন্সিতে খাদিজার GCS ছিল মাত্র ৫, সম্পূর্ণ অচেতন অবস্থায় এবং বাঁচার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ হওয়ায় ইমার্জেন্সিতে তাকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে নিবিড় পরিচর্যা কেদ্র (আইসিইউ) তে পাঠানো হয়। সেখানে সিটিস্ক্যান করে দেখা যায় যে skull bone বিক্ষিপ্তভাবে থ্যাতলানো এবং ব্রেনের অন্যান্য অংশ গুরুতর আক্রান্ত এবং মিডলাইন থেকে সরে গেছে। কালক্ষেপণ না করে সেদিনই তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। সেখানে নিউরোসার্জারি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. এ এম রেজাউস সাত্তারের নেতৃত্বে অত্যন্ত বিপদজনক জেনেও মস্তিস্কে Decompressive surgery করা হয়। তারপরই নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে ধীর গতিতে তার উন্নতি দেখা যায়।
গত ১৭ অক্টোবর অর্থপোডিক বিভাগের ডা. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তার ডান হাতে Multiple Flexor tendon repair করা হয়। নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে থাকাকালীন এক পর্যায়ে তার Tracheostomy করা হয়, যা ১৯ শে অক্টোবর শেষ করা হয় এবং HDU তে স্থানান্তরিত করা হয়।
এরপর ৭ নভেম্বর অর্থপেডিক ও নিউরোসার্জারী বিভাগ এক সঙ্গে মস্তিস্কের হাড় পুনঃস্থাপন ও হাতের অপারেশন করে। ৮ নভেম্বর সার্বিক অবস্থার উন্নতি হলে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
একজন মানুষের GCS থাকে ১৫, এখন খাদিজারও GCS ১৫। কিন্তু তার বাম দিকে অবশ হয়ে আছে।
ওইদিনই সোমবার ফিজিওথেরাপি দেওয়ার জন্য খাদিজাকে সিআরপি বা অন্য কোথাও পাঠানো হবে বলে জানিয়েছিলেন ডাক্তাররা।
মন্তব্য চালু নেই