ক্ষমতা হারাচ্ছেন কি নওয়াজ শরিফ?

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ক্ষমতা হারাচ্ছেন কি? এটিই এখন পাকিস্তানে শত কোটি ডলারের প্রশ্ন।

বৃহস্পতিবার দেশটির সু্প্রিম কোর্ট পানামা পেপার্স দুর্নীতি মামলার রায় দেবেন। রায়ে যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর পদ হারাতে পারেন নওয়াজ শরিফ।

২০১২ সালে ইউসুফ রাজা গিলানিকে আদালত অবমাননা মামলায় প্রধানমন্ত্রীর পদে অযোগ্য ঘোষণা করেছিলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। পাকিস্তানের বিরোধীদলগুলো আশা করছে, নওয়াজ শরিফের বেলায়ও তাই হবে। পারিবারিক দুর্নীতির কারণে আদালত তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদে অযোগ্য ঘোষণা করবেন।

এমন সময় এই রায় হতে যাচ্ছে, যখন পাকিস্তান সব দিক থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। অর্থনীতি ও রাজনীতির স্থিতিশীলতা ফিরছে, শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বেসামরিক গণতান্ত্রিক সরকারের দূরত্ব কমছে। এই মুহূর্তে নওয়াজ শরিফের ক্ষমতাচ্যুতি হলে পাকিস্তানের পুরোনো সংঘাত মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ কোনো অন্যায় করেননি দাবি করলেও পানামা পেপার্স নিয়ে তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা চালাতে সম্মত হন সুপ্রিম কোর্ট। কারণ, ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক হওয়া ইমরান খান হুমকি দেন, এই মামলা গ্রহণ না করলে রাজপথ ছাড়বে না তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।

সুপ্রিম কোর্টের সম্ভাব্য রায় নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে নওয়াজ শরিফের দল পিএলএম-এন। নওয়াজ শরিফকে খালাস অথবা পুনরায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ, প্রধানমন্ত্রীর পদে অযোগ্য- যেকোনো ধরনের রায় দিতে পারেন আদালত।

ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল উভয়ে আশাবাদী রায় তাদের পক্ষে যাবে। নওয়াজ শরিফের দলের প্রভাবশালী নেতা তালাল চৌধুরী বুধবার জিও টিভিতে বলেছেন, রায় আমাদের বিরুদ্ধে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সরকার ও আমাদের পুরো নেতৃত্ব নিয়মানুযায়ী দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

তবে আদালতের রায় প্রতিকূলে গেলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কী করা যেতে পারে, নওয়াজের দল তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে। রায়ে যদি প্রধানমন্ত্রী প্রভাবিত অর্থাৎ পদচ্যুত হন, তাহলে আগাম নির্বাচন দিতে পারে পিএমএল-এন সরকার।

নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রীর পদ হারালে সম্ভাব্য কী করতে পারে তার দল, তার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। দলে দুই ধরনের মত পাওয়া যাচ্ছে। এক. প্রধানমন্ত্রীর পদ হারালে আগাম নির্বাচন দেওয়া। দলের একাংশের নেতারা মনে করেন, আগাম নির্বাচন না দিলে এ ইস্যু কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতি ঘোলা করে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন ইমরান খান।

দুই. প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হলেও আগাম নির্বাচন দেওয়ার কোনো কারণ নেই। ২০১৮ সালে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচনের পক্ষে দলের একাংশের নেতারা। তাদের মতে, নওয়াজ ক্ষমতার বাইরে থাকলে তাতে দল আরো চাঙ্গা হবে।

এখন সব কিছু নির্ভর করছে, বৃহস্পতিবারে কী হয় আদালতের রায়ে, তার ওপর। গোটা পাকিস্তানের দৃষ্টি এখন এদিকেই।

তথ্যসূত্র : ডন ও এনডিটিভি অনলাইন।



মন্তব্য চালু নেই