ক্রিকেট বীরদের রাজকীয় সংবর্ধনা

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে এপ্রিল যে সবচেয়ে উষ্ণতম মাস সেটা মানিকমিয়া অ্যাভিনিউতে ভালো মতোই টের পাওয়া গিয়েছে। চৈত্রের কাঠফাটা রোদ উপেক্ষা করে দুপুরের পর থেকেই ভীড় বাড়তে থাকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দর্শক-সমর্থকদের সংখ্যা।

দুপুর আড়াইটার কিছুটা পরে মঞ্চে ওঠে নেমেসিস। তারা বেশ কয়েকটি গান পরিবেশন করে। এরপর মঞ্চে ওঠে ক্রিপটিক ফেইট। তাদের পরে মঞ্চে আসে মাইলস। মাইলস তাদের জনপ্রিয় তিনটি গান পরিবেশন করার পরই ঘোষণা আসে বাংলাদেশ দল মঞ্চে উঠছে। প্রথমে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তাগণ মঞ্চে ওঠেন। এরপর টিম ম্যানেজমেন্ট (ম্যানেজার ও কোচরা)। জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার ও সাবেক ক্রিকেটার আতাহার আলী খান একে একে মঞ্চে ডাকেন সফিউল ইসলাম, আল-আমিন হোসেন, ইমরুল কায়েস, আরাফাত সানী, মুমিনুল হক, এনামুল হক বিজয়, সৌম্য সরকার, নাসির হোসেন, তামিম ইকবাল, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মাশরাফি বিন মর্তুজা। এক একজন খেলোয়াড় মঞ্চে উঠে আসেন আর গর্জন ওঠে জনসমুদ্রে।

এরপর আমন্ত্রিত অতিথিদের মঞ্চে ডেকে আনা হয়। বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ দলকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ তালিকায় ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, সালমান এফ রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আ.আ.ম.শ আরেফিন সিদ্দিকিসহ অন্যান্যরা। মুহুর্মুহু করতালি, হর্ষধ্বনি, রঙিন আলো, রঙিন প্রজাপতির মতো কনফেত্তির ওড়াউড়ি সব মিলিয়ে অন্যরকম এক পরিবেশ তৈরি হয় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। একে একে বক্তব্য রাখেন বিসিবির কর্মকর্তা, মাশরাফি ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

এরপর বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সের একটি ভিডিও দেখানো হয়। সেই ভিডিও দেখে কিছুটা সময়ের জন্য উপস্থিত হাজার হাজার দর্শক ফিরে যান সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপের স্মৃতিচারণে। ভিডিও শেষ হওয়ার পর পরই মঞ্চের পাশে আতশবাজি ফুটতে শুরু করে। সন্ধ্যার আবীর রাঙা আকাশে আতশবাজির রঙিন ঝলকানি সৃষ্টি করে অসাধারণ এক মুহুর্তের। মোহনীয় করে তোলে উপস্থিত দর্শক সমর্থকদের।

এরপর বাংলাদেশ দল চলে গেলেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলতে থাকে। আবারও মঞ্চে আসে মাইলস। এরপর ওয়ারফেস ও অর্থহীন পারফর্ম করে মাতিয়ে দেন সবাইকে।

এর আগে শুক্রবার বাংলাদেশ দলকে চট্টগ্রামে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে সেটা বাতিল করা হয়।

২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল অসাধারণ পারফরম্যান্স করে। আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ সবগুলো ম্যাচ না জিতলেও তারা যে পারফরম্যান্স করেছে সেটা ক্রিকেট বিশ্বকে মুগ্ধ করেছে।

কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশ হারলেও দেশে ফিরে বিমানবন্দরে পায় রাজকীয় সংবর্ধনা। সেদিন যারা বিমানবন্দরে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের দেখতে ভীড় করেছিল তারা মাশরাফি-মুশফিকদের দেখতে পাননি। কিন্তু আজ তারা সবাইকে দেখতে পেয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই